নিজস্ব প্রতিবেদক :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ও টিউবওয়েল মেকানিকের বিরুদ্ধে ২০২১-২২ অর্থবছরের “সমগ্র বাংলাদেশ প্রজেক্ট” গভীর নলকূপ বিতরণে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
উপকারভোগীর কাছ থেকে জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও তাদের মেকানিক মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগীরা। বর্তমানে ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবু ইউসুফ যোগদানের পর থেকেই স্বেচ্ছাচারিতা ও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে টিউবওয়েল বিতরণ সহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের বরাদ্দকৃত গভীর নলকূপ গুলো বসানোর কথা রয়েছে।
কিন্তু সেখানে জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবু ইউসুফ ও তার অফিস সহকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সরকারি নির্ধারিত ৭ হাজার টাকার পরিবর্তে অনৈতিকভাবে বদরখালী ভেরুয়াখালীপাড়ার জিয়াবুল হক সিকদার ও সাতডালিয়াপাড়ার মোবাশ্বেরা বেগমের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন দুই উপকারভোগী।
এনিয়ে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জনস্বাস্থ্য অফিসের ওই কর্মকর্তা টিউবওয়েল মেকানিক ফোরকান আলমের সাথে যোগসাজসে টিউবওয়েল স্থাপনের নামে অনৈতিকভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী অভিযোগকারী দাবী করেছেন, তাদের দু’জনের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে নেওয়া টাকা ফেরত চাইতে গেলে উল্টো হুমকি দেন বলে দাবী করেন।
ইতিমধ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের উপ-সহকারি প্রকৌশলী ও মেকানিকের বিরুদ্ধে কোন রকম তদন্ত না করে কিভাবে অন্যত্রে পদায়নের প্রক্রিয়া করেছেন তা নিয়ে ভুক্তভোগীরা হতাশা ব্যক্ত করেন।
তারা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
পরে প্রধান প্রকৌশলী সরওয়ার হোসেন নির্দেশে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।
এবিষয়ে সতত্য নিশ্চিত করেছেন জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী।
এলাকাবাসীর মতে, সরকারি বরাদ্দকৃত টিউবওয়েল বিতরণে এভাবে সরকারি দপ্তরে দুর্নীতি করে পার পেলে দুর্নীতির লাগাম টানা কোন দিনই সম্ভব হবে না বলে স্থানীয়দের অভিমত।
এদিকে, ২০২১-২২ অর্থবছরের “সমগ্র বাংলাদেশ প্রজেক্ট” গভীর নলকূপ বিতরণে চকরিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের উপ-সহকারি প্রকৌশলী ও মেকানিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানা গেছে।
তবে বর্তমানে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কার্যালয়ের টিউবওয়েল মেকানিক অভিযুক্ত ফোরকান আলমকে বাঁচাতে অভিযুক্ত ওই মেকানিককে পার্শ্ববর্তী পেকুয়া উপজেলায় বদলী করলেও শেষ পর্যন্ত তাও স্থগিত করা হয়েছে বলে সূত্রে জানায়।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, চকরিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো: আবু ইউসুফ এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে সরকারীভাবে বরাদ্ধ পাওয়া প্রতিটি টিউবওয়েল বিতরনে ২০হাজার টোকা থেকে ৪০হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন সেবা গ্রহিতার কাছ আদায় করা হয়েছে। তিনি টিউবওয়েল বিতরণ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো: আবু ইউসুফের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিউবওয়েল বিতরণে এ ধরণের কোন অনৈতিক আর্থিক লেনদেন হয়নি। অভিযোগটি সত্য নয় বলে দাবী করেন তিনি।
এব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরণের একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। বিষয়টি নির্বাহী প্রকৌশলী কাছে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ।
পাঠকের মতামত: