ঢাকা,সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রভাবশালীদের হুমকিতে এলাকা ছাড়া পরিবার

চকরিয়ায় ৩৯ দিনেও খোঁজ মেলেনি স্কুল ছাত্রী মিলির, নিষ্ক্রিয় পুলিশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: অপহরণের পর ৩৯ দিন পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মেলেনি চকরিয়ার দশম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী মিলি প্রভা সুশীলের (১৫)। একদল বখাটে তাকে অপহরণের পর গুম করেছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বখাটে তৌহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, অপহরণের পর বোনকে উদ্ধারে বড় ভাই আপন সুশীল বখাটেদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে যান। এ সময় পুলিশের পরামর্শে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরে মিলির বাবা স্বপন কুমার সুশীল বাদী হয়ে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বখাটে তৌহিদুল ইসলামের নাম উল্লেখসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে নালিশী অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগ আমলে নেন আদালতের বিচারক। মামলা রুজু করতে থানা ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ২৬ জুন মামলাটি রেকর্ড করা হয়। তবে এতকিছুর পরেও মেয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে মিলির পরিবারে নেমে এসেছে হতাশা। মেয়ের খোঁজে প্রতিনিয়ত এখানে-ওখানে ধর্না দিচ্ছেন তারা। এ অবস্থায় ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পরেছেন মিলির মা সবিতা রাণী সুশীল।
মিলির বড় ভাই আপন সুশীল জানান, উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের জিএনএ মিশনারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তার বোন। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজ পাড়ার নজু ইসলামের ছেলে তৌহিদুল ইসলামসহ (২০) একদল বখাটে মিলিকে উত্ত্যক্ত ও কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এ নিয়ে তৌহিদের বাবা-মা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হলেও পাওয়া যায়নি কোনো সমাধান।
জানা গেছে, গত ২৮ মে সকালে বাড়ি থেকে একটু দূরে টিউবওয়েলের পানি আনতে যায় মিলি। এ সময় আগে থেকেই ওঁত পেতে থাকা বখাটে তৌহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক মিলিকে একটি সিএনজি অটোরিক্সায় তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ঘটনার পর তৌহিদের বাবা, মা মিলিকে উদ্ধার করে দেবে বলে আশ্বাস দেয়। তবে তারা সময়ক্ষেপণ করলে থানার দ্বারস্থ হয় ভুক্তভোগীর পরিবার। কিন্তু থানা পুলিশও মিলিকে উদ্ধারে গড়িমসি করে।
আপন সুশীল বলেন, বখাটেরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা তাদের সাথে পেরে উঠছি না। আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা হয়েছে। এখন আমরা বাড়িতেও থাকতে পারছি না। বখাটেদের পরিবারের সদস্যরা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় গ্রামের বাড়ি ছেড়ে পৌরশহরে বোনের বাসায় উঠেছি।
আপন সুশীল আরো বলেন, মাতামুহুরী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাসান মাহমুদ মামলাটি তদন্ত করছেন। তিনি আমাদের বলেছেন, মিলির কোনো খবর পেলে তাকে জানাতে। এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে আমার বোন কীভাবে উদ্ধার হবে। মিলিকে উদ্ধারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তার বাবা স্বপন কুমার সুশীল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি শাকের মো. যুবায়ের চকরিয়া নিউজকে বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা হয়েছে। ভিকটিমকে উদ্ধার এবং আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

পাঠকের মতামত: