আগামী ২৩এপ্রিল ততৃীয় ধাপে অনুষ্টিতব্য কক্সবাজারের চকরিয়ায় ১২টি ইউপি নির্বাচনে গতকাল বুধবার নির্ধারিত দিনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে ৩২জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছেন চেয়ারম্যান পদে ৯জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে তিনজন ও সাধারণ ওয়ার্ডে পুরুষ মেম্বার পদে ২০জন প্রার্থী। প্রত্যাহারকৃত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে সাতজন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ও দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। বর্তমানে নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বহাল রয়েছেন ৬০৮জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ৫০জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আছেন ১৩৪জন ও সাধারণ ওয়ার্ডে পুরুষ মেম্বার পদে রয়েছেন ৪২৪জন প্রার্থী। তবে এদের মধ্যে উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নে সংরক্ষিত ও সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বি কোন প্রার্থী না থাকায় দুইজন মেম্বার পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। গত ২৭মার্চ মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে উপজেলার ১২টি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পাটি (এরশাদ) জাতীয় পাটি (মঞ্জু) ও স্বতন্ত্র আসনে ৫৯জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৩৭জন ও সাধারণ ওয়ার্ডে পুরুষ মেম্বার পদে ৪৪৪জন প্রার্থী সংশ্লিষ্ট রির্টানিং কর্মকর্তার দপ্তরে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
ফাসিয়াখালী ও হারবাং ইউনিয়নের রির্টানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আতিক উল্লাহ বলেন, ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হেলাল উদ্দিন হেলালী। বর্তমানে বহাল রয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এহেছানুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক মাইন উদ্দিন হাসান শাহেদ। এ ইউনিয়নে সাধারণ ওয়ার্ডে একজন মেম্বার পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। অপরদিকে হারবাং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে কেউ প্রত্যাহার করেননি। ফলে বহাল রয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মিরানুল ইসলাম মিরান, বিএনপির প্রার্থী ছাবের আহমদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন আহমদ বাবর। তবে এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে দুইজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।
কাকারা ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে রিটানিং কর্মকর্তা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.সাইফুর রহমান বলেন, কাকারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজেম উদ্দিন। তবে বহাল আছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শওকত ওসমান, ও বিএনপির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ছাবু। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। অপরদিকে সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে কেউ প্রত্যাহার করেননি। ফলে এখানে বহাল রয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আজিমুল হক আজিম, বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা রোস্তম শাহরিয়ার, এডভোকেট জাহাংগীর আলম ও বিএনপির প্রার্থী সাইফুল কবির চৌধুরী। সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১০জন ও সাধারণ ওয়ার্ডে ৩৯জন প্রার্থী।
বরইতলী ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নে রিটানিং কর্মকর্তা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুজন কাননগো বলেন, বরইতলী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো.ছালেকুজ্জামান। বহাল রয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এটিএম জিয়াউদ্দিন চৌধুরী, বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, বিএনপির প্রার্থী জালাল আহমদ সিকদার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম জাহাংগীর আলম। এ ইউনিয়নে সাধারণ ওয়ার্ডে মেম্বার পদে ৬জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। অপরদিকে কৈয়ারবিল ইউনিয়নে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামীলীগ নেতা হাসানুল হক চৌধুরী। বহাল রয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ চৌধুরী, বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান শরীফ উদ্দিন চৌধুরী ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী মক্কী ইকবাল হোসেন ও জাতীয় পাটির (এরশাদ) প্রার্থী ফয়জুল গনী। এ ইউনিয়নে সাধারণ ওয়ার্ডে ৩জন মেম্বার পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তিনি আরো বলেন, ইউনিয়নের ৪.৫ ও ৬ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড এবং ৬নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে মেম্বার (সদস্য) পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মাত্র দুইজন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, ৬নম্বর ওর্য়াড থেকে চারবার নির্বাচিত বর্তমান মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান এনামুল হক। অন্যজন হলেন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সাবেক নারী সদস্য রোকসানা পারভীন মিরাা। দুই ওয়ার্ডে এই দুইজন ছাড়া আর কোন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল না করার কারনে তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
খুটাখালী ও সাহারবিল ইউনিয়নে রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চৌধুরী মোর্শেদ আলম বলেন, খুটাখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। এ কারনে বহাল রয়েছেন চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, আওয়ামীলীগের প্রার্থী বাহাদুর হক, বিএনপির প্রার্থী আনিসুর রহমান, জাতীয় পাটির (মঞ্জু) প্রার্থী সাংবাদিক এমএইচ আরমান চৌধুরী, জাতীয় পাটি (এরশাদ) মুহাম্মদ আবদুর রহমান, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী জয়নাল আবেদিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত কামাল জিকু, মাইন উদ্দিন ও কুতুব উদ্দিন। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একজন ও সাধারণ ওয়ার্ডে মেম্বার পদে তিনজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। অপরদিকে সাহারবিল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ছরওয়ার আলম। বর্তমানে বহাল রয়েছেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী মাতামুহুরী আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিন বাবুল, বিএনপির প্রার্থী নুরুল আমিন চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ আবদুল হাকিম। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত ও সাধারণ ওয়ার্ডে মেম্বার পদে দুইজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
ডুলাহাজারা ও বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো.খুরশিদুল আলম চৌধুরী বলেন, বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে কেউ প্রত্যাহার করেননি। ফলে বহাল রয়েছেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, বিএনপির প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতলব, স্বতন্ত্র প্রার্থী কফিল উদ্দিন, মো.সোলাইমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১০জন ও সাধারণ ওয়ার্ডে মেম্বার পদে ২৭জন প্রার্থী। অপরদিকে ডুলাহাজারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোক্তার আহমদ চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল হক। বর্তমানে বহাল রয়েছেন বিএনপির প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া, আওয়ামীলীগের প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জামাল হোছাইন, জাতীয় পাটি (এরশাদ) প্রার্থী নুরুল আমিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী কলিম উল্লাহ, নুরুল আলম, আবু ছৈয়দ, নজির আহমদ। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একজন ও সাধারণ ওয়ার্ডে মেম্বার পদে চারজন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছেন।
চিরিঙ্গা ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.সাখাওয়াত হোসেন বলেন, লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রেজাউল করিম সেলিম, সাবেক সভাপতি কবির হোসেন মেম্বার। বর্তমানে বহাল রয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খ.ম বুলেট, বিএনপির প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবু তালেব চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মানিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তাফা কাইছার ও ফরিদুল আলম। এ ইউনিয়নে সাধারণ ওয়ার্ডে মেম্বার পদে একজন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। অপরদিকে চিরিঙ্গা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। ফলে বর্তমানে বহাল রয়েছেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আলহাজ জসিম উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান কেএম ছালাহ উদ্দিন (খাজা ছালাহ উদ্দিন), জামাল হোসেন চৌধুরী ও সাহাব উদ্দিন। এ ইউনিয়নে সাধারণ ওয়ার্ডে মেম্বার পদে দুইজন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছেন।
জানতে চাইলে চকরিয়া ইউপি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান সমন্বয়ক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর বর্তমানে নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বহাল থাকা সকল পদের প্রার্থীদের মাঝে আজ (৭ এপ্রিল) প্রতীক বরাদ্ধ দেওয়া হবে। উপজেলা পরিষদস্থ সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট রির্টানিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্ধের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। #
পাঠকের মতামত: