ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় হয়রানির কবলে আইনজীবি সমিতি নির্মাণ হচ্ছেনা দেড় কোটি টাকার নতুন ভবন

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা আইনজীবি সমিতির নিজস্ব জমিতে একটি নতুন ভবন নির্মাণে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ তহবিল থেকে দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণকাজ শুরুর প্রাক্কালে স্থানীয় একটি ভুমিদুস্য চক্র নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

এব্যাপারে আইনজীবি সমিতির পক্ষথেকে অভিযুক্ত পক্ষের বিরুদ্ধে কক্সবাজার যুগ্ম জেলা দ্বিতীয় আদালতে আইনী পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। এরই আলোকে আদালত আইনজীবি সমিতির অপর মামলার (নং ২৩/১৭) চুড়ান্ত শুনানীতে বিরোধীয় ০৬ শতক জমি সোলেহসুত্রে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি মালিক বলে ডিগ্রিও দিয়েছেন। তারপর অভিযুক্ত ইসমাইল গং নানা চলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে আইনজীবি সমিতির জমিতে নতুন ভবন নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন।

শনিবার দুপুরে চকরিয়া উপজেলা আইনজীবি সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সভাপতি অ্যাডভোকেট আলহাজ মো.হাবিব উদ্দিন মিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মঈনউদ্দিন। এসময় উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবি অ্যাডভোকেট মো.ইলিয়াছ আরিফ, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুল কবির, সিনিয়র আইনজীবি অ্যাডভোকেট দিদারুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মুফিজুর রহমান হেলাল।

সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিব উদ্দিন মিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মঈনউদ্দিন বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ভরামুহুরী মৌজার আর.এস খতিয়ান নং- ১৫, আর.এস ৩৮৭ দাগের ৫ শতক এবং আন্দর তৎ মোতাবেক বি.এস ৫৩নং খতিয়ানের বি.এস ৬২২ দাগের আন্দর ৬ শতক জমির মালিক কক্সবাজার জেলা আইনজীবি সমিতি।

উল্লেখিত জমির চৌহদ্দি উত্তরে বিবাদী মোঃ হাছানের অবশিষ্ট জমি, দক্ষিণে: হাজারিকা ভবনের সীমানা দেয়াল, পূর্বে: ফোরকান গং এর জমি, পশ্চিমে আদালত সড়ক।

সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, উল্লেখিত জমিতে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সরকারি সহায়তায় ইতোমধ্যে দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। পরবর্তীতে ভবন নির্মাণকাজ শুরুর প্রাক্কালে স্থানীয় ইসমাইল নামের এক ব্যক্তি নানাভাবে বাঁধা দেওয়া শুরু করে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইসমাইল মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ১৪৬/১৯নং প্রথম আপীল করেন। পরে উক্ত আপীলের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারী বিজ্ঞ আদালত থেকে আদেশ হয় যে, কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নিজ জিম্মায় এবং নিজ উদ্যোগে আইনজীবী সমিতির সোলেহসুত্রে ডিক্রী মূলে প্রাপ্ত উল্লেখিত জমিতে যে কোন ধরণের নির্মাণ কাজ করিতে পারেন।

সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিব উদ্দিন মিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মঈনউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের জমিতে নতুন ভবন নির্মাণে আদালতে সুনিদিষ্ট আদেশ থাকার পরও ইসমাইল গং আমাদের জমিতে তাঁর অংশ দাবি করে ফের সম্প্রতিসময়ে উচ্চ আদালতে নতুন একটি পিটিশন রুজু করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে দে কোটি টাকা বরাদ্দে প্রাপ্ত একটি আইনজীবি ভবন নির্মাণ কাজ অনিশ্চিয়তায় পড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আইনজীবি নেতৃবৃন্দ বলেন, চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারি জজ আদালতে অন্তত অর্ধশতাধিক আইনজীবি কর্মরত আছে। এই দুইটি আদালতের মাধ্যমে চকরিয়া-পেকুয়া উপজেলার ২৫ ইউনিয়ন একটি পৌরসভার সাত লাখ মানুষ আইনী সেবা নিয়ে থাকে। প্রতিদিন বিচারঙ্গনে অন্তত হাজারো বিচারপ্রার্থী জনগনের উপস্থিতি ঘটে। এই অবস্থায় বিপুল বিচারপ্রার্থীর সমাগম এবং আইনজীবিদের চেম্বার সংকটের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ বাড়ছে।

আইনজীবি সমিতির কর্মকর্তারা অভিযোগ তুলেছেন, অভিযুক্ত ইসমাইল একজন অর্থ আত্মসাকারী, প্রতারক, দাঙ্গাবাজ প্রকৃতির লোক। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী জেবুন্নেছার বিরুদ্ধে বিক্ষুদ্ধপক্ষের অন্তত আটটি মামলা রয়েছে। ইতোপুর্বে চকরিয়া পৌরসভার ড্রেন নির্মাণকাজের সময়ও অনুরূপভাবে বাঁধা দেয় অভিযুক্ত ইসমাইল। তাঁর বিরুদ্ধে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ আছে। সেটি হচ্ছে উপজেলা প্রশাসন ও আদালত ভবনের একেবারে সামনে হাজারিকা নামের একটি ভবন নির্মাণ করেছেন।

বর্তমানে এই ভবনটি ঝুকিপুর্ণ ও মেয়াদ উর্ত্তীণ হলেও তা অপসারণে কোন উদ্যোগ নেই। উল্টো ঝুঁিকপুর্ণ ভবনে দোকান অফিস ভাড়া দিয়ে অর্থবাণিজ্য করছে। তাতে যে কোন সময় ভবনটি ধসে পড়ে প্রাণহাণির সম্ভাবনাও বিদ্যমান। আসলে তিনি স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে ধরাকে সরাজ্ঞান করছেন।

 

 

পাঠকের মতামত: