ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় সড়ক বিভাগের কোটি টাকার জমিতে দখলবাজ চক্রের অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণে চলছে জমিদারি

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::  এদিকে করোনা সংক্রমণের প্রার্দুভাব, অন্যদিকে ভারী বর্ষণে বন্যার তাণ্ডবে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলাজুড়ে বড়ধরণের দুর্যোগ নেমে এসেছে। আর এই সময়ে প্রশাসনিক দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে করোনা সংক্রমন প্রতিরোধ ও বন্যার তাণ্ডব সামাল দিতে গিয়ে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। এই সুযোগে উপজেলার বিভিন্নস্থানে সুবিধাভোগী কতিপয় দখলবাজ চক্র মেতে উঠেছে সরকারি ভুসম্পদ জবরদখলে।

সর্বশেষ কোরবানী ঈদের রাতে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক লাগোয়া চকরিয়া উপজেলার বরইতলী একতাবাজার (গরুবাজার) এলাকায় ঘটেছে সড়ক বিভাগের অধিগ্রহনকৃত আরএস ৬৭০৯ খতিয়ানের বিএস ১৩২৯৭ দাগের জমি জবরদখলের ঘটনা।

অবশ্য ইতোমধ্যে এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের কোটি টাকা দামের জমি দখলে নিয়ে সেখানে আলিশান মার্কেটও গড়ে তুলেছেন জায়েদ নামের এক প্রভাবশালী। সম্প্রতিসময়ে তিনি মার্কেটে নির্মিত একেক একটি দোকান চার থেকে ৬লাখ টাকা সেলামী নিয়ে ভাড়াও দিয়েছেন। সওজের জমিতে নির্মিত মার্কেটে বনফুল নামের একটি অভিজাত খাবার দোকান থেকে ৬ লাখ টাকা সেলামী নিয়েছেন অবৈধ মার্কেট মালিক প্রভাবশালী জায়েদ। সরেজমিনে গেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশপাশের দোকানীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়ক বিভাগের অধিগ্রহনকৃত আরএস ৬৭০৯ খতিয়ানের বিএস ১৩২৯৭ দাগের জমিতে প্রভাবশালী জায়েদ একা নন, তার মতো আরও একাধিক ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে লম্বা লাইনে দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। প্রায় এক যুগের বেশিসময় ধরে গরুবাজার জামে মসজিদ থেকে উত্তরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর পর্যন্ত এলাকায় অন্তত শতাধিক দোকান ও মার্কেট নির্মাণ করে জড়িতরা রীতিমত মালিক সেজে মাসিকহারে ভাড়াও উত্তোলন করছেন।

আশপাশ এলাকার পুরানো দখলবাজদের দেখাদেখিতে এবং করোনাকালীণ সময়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ব্যবস্থার সুযোগে ওই এলাকায় সর্বশেষ কোরবানী ঈদের রাতে ঘটেছে নতুন করে জায়গা দখলের ঘটনা। ওইসময় জড়িতরা রাতের মধ্যে সড়কের জমিতে নতুন করে তিনটি দোকান তৈরী করে নিয়েছেন। এখনো চলছে অবশিষ্ঠ জমিতে দখলবাজদের অপতৎপরতা।

বরইতলী গরুবাজার নতুন করে সওজের জমি দখলের সত্যতা স্বীকার করেছেন কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের চকরিয়া উপ-বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী মো.দিদারুল ইসলাম। তিনি চকরিয়া নিউজকে বলেন, খবরপেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে অভিযান চালাই। ওইসময় দোকান নির্মাণের জন্য মজুদকৃত বেশকিছু মালামাল জব্দও করেছি। এরপরও আমরা দখলচেষ্ঠার বিরুদ্ধে সজাগ আছি।

এব্যাপারে সড়ক ও জনপদ (সওজ) কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা চকরিয়া নিউজকে বলেন, বরইতলী একতাবাজারে সড়ক বিভাগের জমি দখলে নিয়ে সেখানে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। তবে এখন যেহেতু জানতে পেরেছি, অবশ্যই আমাদের অধিগ্রহনকৃত জমিতে নির্মিত সকল অবৈধ মার্কেট-দোকান উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, কেউ আমাদের জমি দখলে নিয়ে মার্কেট দোকান নির্মাণ করবে, ভাড়া উত্তোলন করে জমিদারী চালাবে, তা কোনভাবে সহ্য করা হবেনা।

বিষয়টি প্রসঙ্গে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সৈয়দ সামসুল তাবরীজ চকরিয়া নিউজকে বলেন, সড়ক বিভাগের জমি হলেও সরকারি সম্পত্তি। সেখানে কেউ অবৈধ মার্কেট নির্মাণের সৃুযোগ নেই। সড়ক বিভাগ সহযোগিতা চাইলে অবশ্যই উপজেলা প্রশাসন এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আইনী পদক্ষেপ নেবে।

 

পাঠকের মতামত: