চকরিয়া প্রতিনিধি :: রাতের আধাঁরে চলাচল সড়কের প্রায় ১২ হাজারের অধিক সংখ্যক ইট তুলে চুরি করে নিয়ে গেলেন এক ইউপি সদস্য। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে জনসাধারণের স্বাভাবিক যাতায়াতে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের ৬ ও ৭নং ওয়ার্ডের সওদাগরঘোনা সাইক্লোন সেল্টার সড়ক এলাকায়। এনিয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মীর কাসেম নিজেকে একজন ক্ষমতাধর পরিচয় দিয়ে প্রশাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলীও প্রদর্শন করেন।
আজ ১ এপ্রিল দুপুর ১২টায় সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে সরে জমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, ইতিপূর্বে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই সড়কটি নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রকৌশলী নিয়ে রাস্তা পরিমাপ করেছেন এবং বরাদ্ধের তালিকায় রেখেছেন। কিন্তু নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পূর্বে ৩১মার্চ রাতে কাল বৈশাখীর ঘুর্ণিঝড়ের পর স্থানীয়দের অজান্তে ৭নং ওয়ার্ডের এমইউপি মীর কাসেম তার ভাড়াটিয়া ৩০/৪০জন লোক নিয়ে চলাচল সড়কের প্রায় ১২ হাজারের অধিক পরিমাণ ইট তুলে নিয়ে যায়। বর্তমানে ওই রাস্তা দিয়ে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্নসৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও অভিযুক্ত ইট চোর মীর কাসেমের বিরুদ্ধে রয়েছে চিংড়ি ঘেরে দস্যুতা, জমি জবর দখল, শালিস বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ ও একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান তারা । সড়ক থেকে ইট তুলে নেওয়ার কাজ কোন নূন্যতম জ্ঞানহীন মানুষও করবেনা। এঘটনায় তার প্রতি ধিক্কার জানায় স্থানীয়রা। এলাকাবাসীকেও কলংখিত করেছেন বলে মনে করেন তারা।
জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মীর কাসেম বলেন, রাস্তায় নতুন করে বরাদ্দ আসবে, তাই সড়ক থেকে তিনি ইটগুলো তুলে নিয়ে গেছেন। ইট চুরিসহ নানা অপরাধে তাকে খোদ মাননীয় এমপি- ইউএনও-ওসিও কিছু করতে পারবেনা বলে জনসম্মূখে দাম্ভিকতা দেখান। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে (ইউপি সদস্য মীর কাসেম) রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বরাদ্ধের প্রায় ১০০টি টয়লেট তার ওয়ার্ডে দরিদ্র মানুষের কাছে দিয়ে প্রতিজন থেকে ৩ হাজার ৬শত টাকার করে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
অপরদিকে স্থানীয় ৬নং ওয়ার্ড এমইউপি শেখ সালাহউদ্দিন চকরিয়া নিউজকে জানিয়েছেন, মেম্বার মীর কাসেম কর্তৃক চুরি করে নিয়ে যাওয়া সমূহ অধিকাংশই তার ওয়ার্ডের। ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে ইট চুরি করার পূর্বে তাকে (মীর কাসেম)একাধিকবার বাধা নিষেধও করেছেন। এরপরও ঘূর্ণিঝড় চলাকালে রাতের আধারে সড়কের প্রায় ১২ হাজার চুরি করে নিয়ে গেছেন।
চিরিংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জসিম উদ্দিন চকরিয়া নিউজকে বলেন, একটি সড়ক টেন্ডার হওয়ার পূর্বে এভাবে রাস্তার ইট তুলে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত দু:খজনক। এজন্য তার পরিষদের সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হবে বলে জানান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো: মাসুদুর রহমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ইউপি সদস্য কর্তৃক সড়কের ইট চুরির বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে অবগত হয়েছেন। সড়কের ইট তুলে নেওয়ার বিষয়ে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে অতীব গুরুত্বের সহীত বিষয়টি দেখা হবে বলে জানান।
জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, সরকারি চলাচল সড়কের ইটে হাত দেওয়ার অধিকার কাহারো নেই। নতুন রাস্তা নির্মাণ কিংবা সড়কের ইট উত্তোলনের প্রয়োজন হলেও তা প্রশাসনই দেখবে, এখানে অন্য কাহারো দ্বারা ইট উত্তোলন কিংবা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই আসেনা। ইউপি সদস্য বা যেই হোকনা কেন সড়ক থেকে ইট তুলে নিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: