এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নে অটোরিকশার ব্যাটারী চুরির অপবাদে মো. আরমান(২৩) নামের অটোরিকশা চালক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে সোমবার (১০ জুলাই) সকাল আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে শেখ হাসিনা বানৌজা সড়কের বরইতলী ইউনিয়নের পহরচাঁদা মাদ্রাসার সামনে গোলচক্কর এলাকা থেকে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে। নিহত আরমান চকরিয়া পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের কাহারিয়াঘোনা এলাকার মো. জাকারিয়ার ছেলে। পেশায় তিনি একজন সিএনজি গাড়ি চালক।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন জানান, আগেরদিন রোববার রাত আনুমানিক বারোটার দিকে বরইতলী ইউনিয়নের হাফালিয়া কাটা এলাকায় কিছু লোক এক যুবককে ব্যাটারী চুরির অভিযোগ তুলে আটক করে হাতেপায়ে রশি দিয়ে বেঁধে বেদড়ক মারধর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হাতেপায়ে রশি বাঁধা অবস্থায় মারধর করতে করতে ওই যুবককে স্থানীয় পহর চাঁদা মাদরাসার সামনে নিয়ে যায়। ওইসময় আশপাশের লোকজন পুলিশে খবর দিলে অবস্থা বেগতিক দেখে আহত যুবককে সেখানে ফেলে রেখে হামলাকারী দুবৃর্ত্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) পুলিশ পরিদর্শক মো.কাইছার হামিদ বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তবে ওইসময় হামলাকারী দুবৃর্ত্তরা আহত যুবককে লুকিয়ে রাখায় পুলিশ গিয়েও তাকে খুঁজে পায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, রাতে চুরির অপবাদে অটোরিকশা চালক ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ ভোররাতে সড়কের পাশে ফেলে গেছে দুবৃর্ত্তরা।
রাতে ঘটনাস্থলে যাওয়া হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির এসআই অপু দে বলেন, রোববার রাতে ওই সড়কে আমার ডিউটি থাকায় খবর পেয়ে রাত আনুমানিক সাড়ে বারোটার দিকে আমি পুলিশ টিম নিয়ে গিয়ে সড়কের বিভিন্ন অংশে তল্লাশি চালায়।
কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা ওই যুবককে অন্যত্রে সরিয়ে নিয়ে যায়। পরে অনেক খুঁজাখুঁজি করেও না-পেয়ে আমরা চলে এসেছি।
গতকাল সোমবার দুপুরে চকরিয়া থানায় নিহতের ভাই ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই আরমান মাঝেমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে অসুস্থ অবস্থায় তার মানসিক সমস্যা দেখা দিত। তিনি বলেন, শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। মরদেহের কোমর থেকে নিচের অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমার ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ রশি দিয়ে বেঁধে সড়কে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওয়াহিদুল ইসলাম।
চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. আবদুল জব্বার বলেন, সোমবার সকালে খবর পেয়ে বরইতলী ইউনিয়নেে সড়কের পাশ থেকে আরমান নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। খুনের ঘটনায় রহস্যউদঘাটন ও জড়িত চক্রকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
পাঠকের মতামত: