এম.মনছুর আলম, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়ায় বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব ভয়াবহ আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে।এতে পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে কোথাও না কোথাও বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণ। দিন দিন মারাত্মক আকারে এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ায় সাধারণ লোকজনের মধ্যে এক ধরণের আতঙ্ক বিরাজ করছে।এনিয়ে স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নে চারটি গ্রামে একদিনে বেওয়ারিশ পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ১৫ নারী-পুরুষ আহত হয়।এ ঘটনা নিয়ে বিএমচর ইউনিয়নস্থ দক্ষিণ বহদ্দার কাটা, উত্তর বহদ্দার কাটা, পুচ্ছালিয়া পাড়া ও কৃষ্ণাপুর এলাকাসহ চারটি ওয়ার্ডে লোকজনের মাঝে নানা ধরণের ভীতি কাজ করছে। বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ের আক্রমনের ভয়ে ছোট ছোট কোমলমতি শিশুরা ঘর থেকে বের হয়ে খেলাধুলা করতে ভয় পাচ্ছেন। মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত ইউনিয়ের চারটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে পৌরসভা এলাকায়ও বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ লোকজন আতঙ্কে রয়েছে।
বিএমচর ইউনিয়নে বেওয়ারিশ কুকুরের শিকার আক্রান্তরা হলেন, উত্তর বহদ্দার কাটা এলাকার আবদুল হাকিম (৫৬), মনোয়ারা বেগম (৪৫), শিশু শিক্ষার্থী মনির খান (১০), জয়নাল আবদিন লালা (৪৫), আবদুল হামিদ (৩৫), নুরুল আমিন (৩০), দক্ষিণ বহদ্দার কাটা এলাকার আবদুর রহিম (৩৬), গুরাপুতু (২৯), রাসেল (১১), পুচ্ছালিয়া পাড়া এলাকার রিয়াজ উদ্দিন (৩৩), কৃষ্ণাপুর এলাকার আবদুল হক (৪০), রুবেল (২৫) ছাড়াও আরো তিনজন ব্যক্তিকে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ছে বলে স্থানীয়রা জানান।
বহদ্দার কাটা এলাকার বাসিন্দা আবদু রহিম বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বেওয়ারিশ পাগলা কুকুরটি আমাদের এলাকায় আসে।রাত্রে রাস্তায় দিয়ে চলাচল করার সময় প্রথমে চারজনকে আক্রমন করে কামড় দেয়। সকালের দিকে শিশুরা রাস্তায় খেলাধুলা সময় এতে হঠাৎ কুকুরটি কোথায় থেকে এসে কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাদের এলাকার আরো ৪ জনকে কামড়ায়।এছাড়াও আমাদের পাশ্ববর্তী দুটি গ্রামের ৬/৭কে কামড় দিয়ে চলে যায়। এলাকার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে হন্য হয়ে খুঁজছে ওই কুকুরটিকে মেরে ফেলার জন্য। ঘটনার সংবাদ পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমও ছুটে যান। বিভিন্ন এলাকায় খোজ নিয়ে অদ্যাবধি বেওয়ারিশ কুকুরটি পাওয়া যায়নি।এতে সাধারণ লোকজনের মাঝে আতঙ্ক কাজ করছে।
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী চিকিৎসক মো. নিজাম উদ্দিন জানান, চকরিয়া সরকারী হাসপাতালে বেশ কদিন ধরে চিকিৎসা নিতে আসে কুকুরের কামড়ানো রোগীরা। হাসপাতালে সরকারীভাবে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় বাইরে থেকে ক্রয় করে ভ্যাকসিন পুশ করা হয়েছে। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে গেছে। তবে অধিকাংশ কুকুরের কামড়ে আহত শিশুর পরিবার দরিদ্র হওয়ায় ভ্যাকসিন কিনে পুশ করতে বেগ পেতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিএমচর ইউপি চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলম কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়নের চারটি গ্রামের ১৫/১৬জন ব্যক্তিকে একটি বেওয়ারিশ কুকুর সাধারণ লোকজনকে কামড় দেয়ার ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। স্থানীয়দের মাধ্যমে কুকুরটি নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।এছাড়া কুকুরের কামড়ানো আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
পাঠকের মতামত: