ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

আদালতের সমন জারি

চকরিয়ায় বৃদ্ধ মা-বাবাকে নির্যাতনকারী ভন্ড বৈদ্য ছেলেসহ ৪জনের নামে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে জন্মদাতা মা-বাবাকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে অভিযুক্ত ছেলে ভন্ড বৈদ্য আবদুল মালেক ও তার স্ত্রীসহ ৪জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।

ভুক্তভোগী মা-বাবার অভিযোগ, অভিযুক্ত আবদুল মালেক দীর্ঘদিন ধরে নিজবাড়িতে প্রতারণার ফাঁদ বসিয়ে বৈদ্যালীর নামে সহজ সরল মানুষকে ঝাড়ফুক দিয়ে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাঁর এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে ভবিষ্যতে বাড়িতে প্রশাসনিক কোনধরনের বাঁধা বিপত্তি বা অভিযান হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে বৈদ্যালী বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলে আবদুল মালেক তার স্ত্রীর প্ররোচনায় অসহায় মা-বাবা দিচ্ছেনা ভরণ পোষণ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

সর্বশেষ কদিন আগে ছেলের কাছে ভরণ পোষণ চাইতে গিয়ে উল্টো শারীরিক ভাবে মারধর ও লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন জন্মদাতা অসহায় বয়োবৃদ্ধা বাবা-মা। চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ছাইরাখালী গ্রামে।

এ ঘটনায় শারীরিক লাঞ্চনার শিকার বাবা মোঃ নুরুল ইসলাম (৭০) বাদী হয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা (নং সিআর২১৫৮ /২৩) দায়ের করেছেন। আদালতের বিচারক বাদির অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলার আসামি অভিযুক্ত ছেলে ও তার স্ত্রীসহ ৪জনকে আগামী ১০অক্টোবরের মধ্যে আদালতে সশরীরের হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদির আইনজীবী।
মামলা এজাহারে আসামীরা করা হয়েছে, বাদির ছেলে বৈদ্য আবদুল মালেক (৩৬), তার স্ত্রী খালেদা বেগম (৩২), মেয়ে তাসপিয়া বেগম (২১) ও ছেলে ওসমান গণি (২৩)। এছাড়াও মামলায় আরও ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলার আর্জিতে বাদী বুদ্ধা নুরুল ইসলাম (৭০) জানিয়েছেন, আমার ছেলে আবদুল মালেক আমার বসতঘরের পূর্ব পাশে আলাদা ঘর করে পৃথক সংসার করছে। মালেক জীবিকা হিসেবে প্রতারণা মূলক অবৈধ বৈদ্যালী ব্যবসা করছেন। বিভিন্ন এলাকার লোকজন এনে তাদেরকে নানান ফন্দিতে বসে এনে ঘরে অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।

এই অবস্থায় সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর দুপুর ১ ঘটিকার দিকে আমি এবং আমার স্ত্রী আমার বাড়িভিটার ভেতরে অনৈতিক কার্যকলাপে বাঁধা প্রদান করি এবং আমাদের ভরণ-পোষন প্রদানের জন্য চাপ দিই। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে রেগে উঠে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে কোন ভরণ-পোষণ দিবে না, বসত ঘরে অনৈতিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাবে হুমকি দিয়ে বাড়িতে হামলা শুরু করে।

একপর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে আমার ছেলে মালেক বৈদ্য আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়। এসময় আমার স্ত্রী মাজেদা বেগম আমাকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে তাকেও সর্বশরীরে কিল, লাথি, ঘুষি মেরে জখম করে। আমার ছেলে আবদুল খালেক আমাদের চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে তাকেও আক্রমণ করে। এক পর্যায়ে আবদুল খালেককে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধের চেষ্টা করে।

হামলা তাণ্ডব চলাকালে বাড়ির ভেতরে কাঠের সিন্ধুকের তালা ভেঙ্গে নগদ ৩৫ হাজার টাকা ও আমার স্ত্রীর ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের ১টি ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের লকেট লুটে নিয়ে যায়। হামলায় আসবাবপত্র ভাংচুর করে ২০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে দাবি করেন আহত নুরুল ইসলাম। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহত মা-বাবাকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: