ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় পৌরবাসির ভাগ্যউন্নয়ন ও নিরাপত্তায় শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে -জেলা প্রশাসক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার লক্ষাধিক জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পৌর শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ অতীব জরুরি বলে জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানিয়েছেন পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী। গতকাল সোমবার বিকালে চকরিয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বন্যাদুর্গত মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষথেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে টেকসই শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করে এব্যাপারে অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথি কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান এর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে পৌর ভবন মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বন্যাদুর্গত ৭০০ পরিবারের নারী-পুরুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান, চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ।
চকরিয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী মাস উদ মোর্শেদ এর সঞ্চালনায় ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফোরকানুল ইসলাম তিতু, প্যানেল মেয়র মুজিবুল হক মুজিব, নারী কাউন্সিলর রাশেদা বেগম, আঞ্জুমান আরা বেগম, ফারহানা ইয়াছমিন ফোরকান, কাউন্সিলর এম নুরুস শফি, সাইফুল ইসলাম, ইখতিয়ার উদ্দিন হানিফ, জাফর আলম কালু, আবদুস ছালাম, নুরুল আমিন ও কাউন্সিলর বেলাল উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে পৌরসভা কর্মকর্তা- কর্মচারী সার্ভিস এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় নেতা আবু রাশেদ মোহাম্মদ জাহেদ উদ্দিন, চকরিয়া পৌরসভা কমিটির সভাপতি জহুরুল মাওলা, সাধারণ সম্পাদক রাজিফুল মোস্তফা রাজিফ সহ পৌরসভার সকল কর্মকর্তা কর্মচারী, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, মাতামুহুরী নদী প্রবাহিত হয়েছে চকরিয়া পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের বুকচিড়ে। এ কারণে নদীতে যখনই পাহাড়ি ঢল নামে তখন চকরিয়া পৌরসভার বিভিন্ন জনপদ পানিতে তলিয়ে যায়। তাতে জনদুর্ভোগ বাড়ার সাথে সাথে রাস্তাঘাটের অবস্থার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। একই অবস্থা হয়েছে এইবারের বন্যায়। ভেঙে গেছে চকরিয়া শহররক্ষা বাঁধের একাধিক পয়েন্ট। দিগরপানখালী পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকেছে ঢলের পানি।

তিনি বলেন, স্বরণকালের বন্যায় মাতামুহুরী নদীর ঢলের পানি কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়ক অতিক্রম করে চকরিয়া পৌরশহরে প্রবাহিত হয়েছে। এতে বেশিরভাগ মার্কেটের নীচতলার কমপক্ষে চারশত দোকানপাট মালামাল সহ পানিতে তলিয়ে যায় পাঁচদিন ধরে। এই অবস্থায় চকরিয়া শহরের ব্যবসায়ীদের কমপক্ষে শতকোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন মেয়র আলমগীর চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেছেন, বন্যার তাণ্ডবে চকরিয়া উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন জনপদ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনকে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আশাকরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার চকরিয়া উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সবধরনের সহযোগিতা করবে।

জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান চকরিয়া পৌরসভার শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার, রাস্তাঘাটের উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, বন্যার সময় তার ব্যক্তিগত তহবিল ও সরকারি বরাদ্দের মাধ্যমে পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় বন্যাদুর্গত মানুষের মাঝে চাউল বিতরণ করেছেন। পাশাপাশি দুর্যোগকালীন সময়ে পৌর ভবনে রান্না করে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে প্রতিটি এলাকায় বানবাসি মানুষের মাঝে রান্নাকরা খাবার বিতরণ করেছেন। এছাড়াও তিনি স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীকে নিয়ে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে তাৎক্ষণিক পানি নিষ্কাসনের বাঁধা অপসারণ করে দিয়েছেন।

 

পাঠকের মতামত: