এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৪১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে চলতি অর্থবছর পরিকল্পিত উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে অন্তত ১২৮টি বিদ্যালয়। ইতোমধ্যে উন্নয়নের ছোয়ায় এসব বিদ্যালয়কে নতুনরূপে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তারের দিকনির্দেশনায় বর্তমানে এসব বিদ্যালয়গুলোকে স্মার্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাস্তবে রূপ দেওয়া হয়েছে। পরিচ্ছন্ন বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা, দেখতে আকর্ষণীয়, ঝঁক-ঝঁকে ও সপ্ত-রঙে রঙিন করা হচ্ছে বিদ্যালয়গুলোকে।
বিদ্যালয়ের ভেতরে-বাইরে আকাঁ হচ্ছে দেশের ঐতিহাসিক ব্যক্তিবর্গের ছবি, জাতীয়পাখি, জাতীয়ফল-ফুল, প্রাথমিকবাংলা ও ইংরেজীবর্ণমালা। বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের আশপাশ নিত্যকার থাকছে পরিচ্ছন্ন এবং পরিপাটি। শিক্ষার্থীরা যেন বিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট ও অনুপ্রাণিত হয় সেইজন্য করা হচ্ছে সব ব্যবস্থা। বিদ্যালয় স্মার্ট করা শেষ হলে একাজ চলবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপরও।
বিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি দেখতে বৃহস্পতিবার সকালে চকরিয়া পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাজিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরির্দশন করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার। ওইসময় তিনি বিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পরিদর্শনকালে এসময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের জমিদাতা শিক্ষানুরাগী মাস্টার আবদুর রাজ্জাক, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা (এসএমসি) কমিটির সভাপতি সাংবাদিক এম. জিয়াবুল হক, প্রধান শিক্ষক জিএম রুকুন উদ্দিন, সিনিয়র শিক্ষক আরঙ্গজেব তারেক, সহকারী শিক্ষক সুচিত্রা চৌধুরী, পারভিন আক্তার, জেসমিন আক্তার, মিশুরী জন্নাত মিশু।
চকরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার বলেন, চলতি অর্থবছর পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থবরাদ্দ নিশ্চিতের মাধ্যমে বিদ্যালয় গুলোকে পরিকল্পিত উন্নয়নে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। বর্তমানে এসব বিদ্যালয়গুলোকে কচি-কাচা শিক্ষার্থীদের নিকট আকর্ষণীয় করতে বিদ্যালয় গুলোকে এক এক করে সাজানো-গুছানোহচ্ছে। বিদ্যালয়গুলোর আশ-পাশ যেন প্রতিনিয়ত পরিচ্ছন্ন থাকে সেইব্যবস্থা করা হয়েছে। উন্নত স্যানিটেশন সিস্টেম, উন্নতপরিবেশ, আকর্ষণীয় বিদ্যাঙ্গন, আঙ্গিনায়, ফুল, ফল ও পরিবেশবান্ধববৃক্ষ রোপনপূর্বক বিদ্যালয় গুলোর বাহ্যিক স্থানগুলো মনোরম করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নের আওতায় থাকা বিদ্যালয় গুলোর ভেতরে ও বাইরে দেওয়ালে আকাঁ হয়েছে দেশের ঐতিহাসিক ব্যক্তিবর্গের ছবি, জাতীয়পাখি, জাতীয়ফল-ফুল, প্রাথমিক বাংলা ও ইংরেজী বর্ণমালা। বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের আশপাশ নিত্যকার থাকছে পরিচ্ছন্ন এবং পরিপাটি। এভাবে উপজেলার ১৪১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরমধ্যে ১২৮টি বিদ্যালয়কে সপ্তরঙে রঙিন করে স্মার্ট বিদ্যালয়ে রূপ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয় গুলো আধুনিকরূপে স্মার্ট করণের কাজ শেষ হলে শিক্ষকদেরও করা হবে স্মার্ট। শিক্ষকরা যেন শিক্ষার্থীদের মাঝে অনুকরণীয় ও অনুস্মরণীয় হয় এবং শিক্ষকদের দেখলে যেন শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়, তজ্জন্য শিক্ষকদের উপর নির্দেশনা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে শিক্ষকদের জন্য ড্রেসআপ‘র ব্যবস্থা করা হবে। কোন শিক্ষক অপরিচ্ছন্ন ও কুঁকড়ানো বস্ত্র পরিধান করে যেন বিদ্যালয় না আসে সেদিকে নজর রাখা হবে।
উপজেলার একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষক নেতারা দাবী করেন, বর্তমান প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গুলশান আকতার উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে অমূলপরিবর্তন এনেছেন, শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে যথাসময়ে গমন ও প্রস্তান নিশ্চিত করছেণ তিনি। শিক্ষকদের যুক্তিসংগত সকল আর্থিক বিষয় যেমন, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাসমুহ যথাসময় পাওয়া নিশ্চিতকরেছেন, যানিয়ে আগেকার সময় শিক্ষকরা নানাভাবে হয়রানীর শিকার হতেন। এছাড়া শিক্ষার উন্নয়নে বহুমুখি কর্মযজ্ঞ প্রণয়ন করে দিয়েছেন তিনি।
শিক্ষকরা জানান, উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সব শিক্ষার্থী যেন দেখে দেখে রিডিং ও স্পেলিং করতে পারে সেই জন্য বাধ্য-বাধকতা করা হয়েছে, যা শিক্ষকরাই নিশ্চিত করবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন নিশ্চিত করতে ১০ জন বিশিষ্ট একটি টীম করা হযেছে। শিক্ষার্থীদের স্পিকিং দক্ষতা বাড়াতে ১ম থেকে ২য় শ্রেনীপর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নিজসম্পর্কে ৫টি বাক্য এবং ৩য় থেকে ৫ম শ্রেনীশি ক্ষার্থীদের ১০টি বাক্য সঠিকভাবে বাংলা ও ইংরেজীতে বলা নিশ্চিত করছেণ তিনি। এছাড়া ঝড়েপড়া রোধ করতেও নানামুখি কর্মযজ্ঞ দেওয়া হয়েছে শিক্ষকদের উপর।
শিক্ষক ও শিক্ষক নেতারা বলেন, চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সকল সিদ্ধান্ত যুগোপযোগী, এসব সিদ্ধান্ত বাস্তাবয়ন হলে শিক্ষাক্ষেত্রে চকরিয়া উপজেলা হবে জেলার মডেল। এভাবে চকরিয়া উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষাখাতের অমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন বর্তমান শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার। ##
পাঠকের মতামত: