এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরি নদীতে অবৈধভাবে শক্তিশালী ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের প্লাস্টিকের পাইপ ভাঙার অপবাদ দিয়ে মোঃ ছামিমুল ইসলাম (১২) নামের এক স্কুল ছাত্রকে হাত- পা বেঁধে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
গত রোববার (২৬ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার বরইতলীল ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে গোবিন্দপুর দক্ষিণপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত স্কুল ছাত্র ওই এলাকার আলমগীর বাদশার ছেলে। তিনি গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র।
এ ঘটনায় আহত স্কুল শিক্ষার্থীর মাতা আইয়ুফা বেগম বাদি হয়ে গতকাল মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) জড়িত চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন ও আহত শিক্ষার্থীর স্বজনদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার বরইতলী গোবিন্দপুর পয়েন্টে মাতামুহুরি নদীতে অবৈধভাবে শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন বরইতলী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে মৃত ছকিউর রহমানের ছেলে আবু শমা, মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে মো: এনাম, মৃত ছৈয়দ আহমেদের ছেলে কুতুবউদ্দিন, আবু শমার ছেলে মোঃ বাপ্পি।
শনিবার রাতে কে বা কারা তাদের ড্রেজার মেশিনের বালু উত্তোলনের প্লাস্টিকের পাইপ ভেঙে ফেলে। এরই জেরে রোববার সকালে স্কুল পড়ুয়া ছাত্র মোঃ ছামিমুল ইসলামকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারী চক্রের লোকজন বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে হাত-পায়ে শিকলে বেঁধে রাখেন।
পরে তাকে মারধর করেন বালু উত্তোলনে জড়িতরা। একপর্যায়ে মারধর সহ্য করতে না পেরে কয়েকবার অজ্ঞান হয়ে যায় এই শিশু । অবস্থা দেখে এ ঘটনায় ওই ছাত্রের কোনো সম্পৃক্তা না পাওয়ায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন।
আহত ছাত্রের মা আইয়ুফা বেগম বলেন, মাতামুহুরি নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন কারনে বন্যার সময় গ্রামের বাঁধ গুলো ভেঙে গিয়ে এলাকাবাসী বন্যার সময় দুর্ভোগে পরে। এই ব্যপারে আমি তাদের বাধা দেই। সে কারণে বালু উত্তোলনের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ছোট ছেলেকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয়। এ ঘটনার বিচার দাবী করছি।
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বালু উত্তোলনে জড়িত মোঃ এনাম বলেন, ড্রেজার মেশিনের পাইপ ভাঙার বিষয়ে ছামিমুল ইসলাম কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি সে স্বীকার করেছে। তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।
বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কেউ যদি স্কুল ছাত্রকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা আইনের লঙ্ঘন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান ব্রলেন, মাতামুহুরী নদী থেকে বালু উত্তোলনে সরকারি কোনধরনের অনুমতি নেই। সেখানে পাইপ ভাঙার অপবাদে স্কুলছাত্রকে মারধর করার ঘটনা একটি মারাত্মক অপরাধ।
তিনি বলেন, ঘটনায় জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি তাদের অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
পাঠকের মতামত: