নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চকরিয়ার ডুলাহাজারায় একটি বাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে খবর পেয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালাতে গেলে সশস্ত্র ডাকাত-সন্ত্রাসীদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন এক সেনা কর্মকর্তা।
আজ মঙ্গলবার ভোররাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়ায় ডাকাতকবলিত একটি বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ৬ জন ডাকাত-সন্ত্রাসী আটক হয়েছে বলে শুনেছেন চকরিয়া থানার ওসি মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া। তবে এর বেশি বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি ওসি।
পুলিশ জানায়- এ সময় ডাকাতেরা ওই সেনা কর্মকর্তাকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত ও গুলি করলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এই অবস্থায় তাকে অ্যাম্বুলেন্স এনে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরে রামু এলাকায় মারা যান তিনি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়- ডুলাহাজারার পূর্ব মাইজপাড়ার ওই বাড়িতে ডাকাত হানা দিয়েছে, এমন খবর পেয়ে যৌথবাহিনীর একটি দল অভিযানে যায়। এ সময় আভিযানিক দলে থাকা লেফটেন্যান্ট তানজিম সশস্ত্র এক ডাকাতকে জাপটে ধরে ফেলেন। তখনই ডাকাতের হাতে থাকা ধারাল ছুরি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করা হয়। এমনকি অপরাপর ডাকাতেরা উপর্যপুরি গুলি করতে থাকে যৌথবাহিনীর টিমকে লক্ষ্য করে। সেখান থেকে একটি গুলি সেনা কর্মকর্তার শরীরে বিদ্ধ হয়।
স্থানীয়রা জানায়- চকরিয়ার ডুলাহাজারার আলোচিত রিভার্জ পাড়া, কাটাখালী, ডুমখালী, বালুচর এলাকাটি হচ্ছে সংরক্ষিত বনভূমি। সেই এলাকাটি ডাকাত-সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য এবং নিরাপদ আস্তানা হিসেবে গড়ে ওঠে গত কয়েকবছর ধরে। সেখান থেকে আশপাশের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র ডাকাতি, দস্যুতা, দখলবাজি, চাঁদাবাজি ধর্ষণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত করে আসছিল সশস্ত্র ডাকাত-সন্ত্রাসীদল। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এসব অপরাধীদের তত্পরতা দমাতে ইতোপূর্বে তেমন অভিযান চালাতে পারেনি। কারণ সংঘবদ্ধ এসব ডাকাত-সন্ত্রাসীদলের সদস্য সংখ্যা হচ্ছে অর্ধশতাধিক।
এমনকি তাদের হেফাজতে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। এবার সেই ডাকাত-সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রেহায় পায়নি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাও।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘ডাকাতকবলিত একটি বাড়িতে অভিযান চালাতে গেলেই যৌথবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করা হয় সশস্ত্র ডাকাত-সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে। এ সময় এক ডাকাতকে ধরা হলে সেই ডাকাত সেনাবাহিনীর অফিসার লেফটেন্যান্ট তানজিমকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে। একটি গুলিও করা হয় তাকে লক্ষ্য করে। এই অবস্থায় তিনি গুরুতর আহত হলে নেওয়া হয় চট্টগ্রামস্থ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
ওসি আরও জানান- ঘটনার পর থেকে যৌথবাহিনীর অভিযানে বেশ কয়েকজন ডাকাত-সন্ত্রাসীকে আটক করা হয় বলে তিনি শুনেছেন। তবে এই বিষয়ে সবিস্তারে পরে জানানো হবে। ঘটনাস্থলে এখনো অভিযান চলছে। আটক থেকে রক্ষা পেতে ডাকাত দলের সদস্যরা পাশ্চবর্তী চিংড়ীঘের গুলোতে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।
পাঠকের মতামত: