ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

শর্তাবলী লঙ্ঘনে ইজারা বাতিল ঘোষনা

চকরিয়ায় জেলা প্রশাসনের তিনটি বদ্ধজল মহালে বিপুল রাজস্ব ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অধীন চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ঢেমুশিয়া বদ্ধজল মহাল ও পোড়া মাতামুহুরী-১ এবং পোড়া মাতামুহুরী-২ বদ্ধজল মহাল তিনটি যথাসময়ে ইজারা কার্যক্রম সম্পাদনে ব্যর্থ হওয়ায় জেলা প্রশাসনের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। উপরোক্ত ঘটনার জেরে সর্বশেষ ১৬ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো.আল আমিন পারভেজ স্বাক্ষরিত আলাদা তিনটি অফিস আদেশে উল্লেখিত তিনটি খালের ইজারা সংক্রান্ত শর্তাবলী লঙ্ঘনের অভিযোগে চলতি বছরের ইজারা কার্যক্রম বাতিল ঘোষনা করা হয়েছে।

ইজারা গ্রহিতা মাতামুহুরী উপকুলীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি দলিলুর রহমানের কাছে পাঠানো জেলা প্রশাসনের অফিস আদেশে (৭৮৪ নং স্বারকে) বলা হয়েছে, ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ঢেমুশিয়া বদ্ধজল মহালটি ১৪২৭ থেকে ১৪২৯ বাংলা সনের (তিনবছর) জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নেয়া হলেও চুক্তির শর্তাবলীর ১৭ (খ) নম্বর শর্তমতে ১৪২৮ সনের ইজারামুল্য পুর্ববতী বছর অর্থ্যাৎ ১৪২৭ সনের ১৫ চৈত্রের মধ্যে পরিশোধের বিধান আছে। কিন্তু আপনি ১৪২৮ সনের ইজারামুল্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করেনি। এ সংক্রান্ত অফিস থেকে পত্র প্রেরণ এবং মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করা হলেও ইজারার টাকা পরিশোধ করা হয়নি। এ অবস্থার কারণে ইজারামুল্য ৯ লাখ ৬২ হাজার ৬৬৭ টাকার বিপরীতে ভ্যাট ও আয়কর খাতে সরকারের বিপুল টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। তাই জেলা প্রশাসন শর্তাবলীর ১৭ (খ) নম্বর শর্ত লঙ্গণের দায়ে ইজারা কার্যক্রম বাতিল ও জামানতকৃত ৬০ হাজার টাকার পেঅর্ডার বাতিল ঘোষনা করেছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো.আল আমিন পারভেজ একই তারিখে স্বাক্ষরিত ৭৮৫ নং ও ৭৮৬ নং স্বারকের অপর দুইটি আদেশে অনুরূপভাবে শর্তাবলী ভঙ্গের অভিযোগে চকরিয়া উপজেলাধীন পোড়া মাতামুহুরী-১ এবং পোড়া মাতামুহুরী-২ বদ্ধজল মহাল দুইটিও ইজারা কার্যক্রম এবং জামানতকৃত পেঅর্ডার বাতিল ঘোষনা করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের রাজস্ব ক্ষতির কারণে তিনটি বদ্ধজল মহালের ইজারা বাতিল করা হলেও পরবর্তীতে খাস কালেকশন পুর্বক উল্লেখিত তিনটি বদ্ধজল মহাল সচল রাখার বিধান রয়েছে। সেই হিসেবে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনার আলোকে চকরিয়া উপজেলা ভুমি বিভাগ এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

ইজারা কার্যক্রম বাতিল ঘোষনা করার পর ভুমি বিভাগ ইতোমধ্যে খাস কালেকশনের আওতায় বদ্ধজল মহালগুলো রক্ষনাবেক্ষনের প্রস্তুতিও নিয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, বদ্ধজল মহাল গুলো থেকে খাস কালেকশনের মাধ্যমে রাজস্ব আয়ের প্রস্তুতি নেয়ার মুর্হুতে শর্তাবলী লঙ্গনে জড়িতরা ফের মহালগুলো ভাগে নিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আবারও তাঁরা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরকে ম্যানেজ করে বদ্ধজল মহালগুলো ইজারা নেয়ার জোর চেষ্ঠা চালাচ্ছে। এতে তাঁর সফল হলে আবারও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন বিপুল টাকার রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

পাঠকের মতামত: