চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::
কক্সবাজার চকরিয়ায় জায়গা দখলকে কেন্দ্র দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত বয়োবৃদ্ধাসহ ১০ নারী-পুরুষ। ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এতে ২জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদের জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার (৩০মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নের ২নম্বর ব্লকের শহরিয়া পাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নের ২নম্বর ব্লকের শহরিয়া পাড়া এলাকার মৃত ডা: আবদুল মজিদের ছেলে মোকতার আহমদ গং ও সিরাজুল হকের মধ্যে বদরখালী সমিতির শেয়ারভুক্ত পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত জমির দখল-বেদখল নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ওই জায়গা জমি নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে বিভিন্ন আদালতে মামলাও বিচারাধীন রয়েছে। শনিবার সকালে সিরাজুল হকের ছেলে আবু বক্কর তার লোকজন নিয়ে বিরোধীয় জায়গায় গাছের চারা রোপন করছিল। খবর পেয়ে ওই জায়গায় বাধা প্রদান করে নিষেধ করতে যান মোকতার আহমদ গং। এতেই দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি জের ধরে একপর্যায়ে দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় দু’পক্ষের সংঘর্ষে ও হামলায় বয়োবৃদ্ধ নারী-পুরুষসহ অন্তত ১০ ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়। স্থানীরা এগিয়ে এসে ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তৎমধ্যে গুরুতর আহত দুই ব্যক্তিকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন, বদরখালী ২নম্বর ব্লকের শহরিয়া পাড়া এলাকার মৃত ডা: আবদুল মজিদের ছেলে মোকতার আহমদ (৭০), তার ছেলে কফিল উদ্দিন (৩৬), মৃত মোজাম্মেল হকের স্ত্রী হামিদা খানম (৬০), তার ছেলে ওমর ফারুক (৩৪), একই এলাকার সিরাজুল হকের ছেলে আবু বক্কর (৩৯), তার মা ছেনোয়ারা বেগম (৫৮), আজিজুল হকের স্ত্রী জন্নাতুল ফেরদৌস (৪৮), তার মেয়ে জোসনা বেগম (২৫)। তন্মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এদিকে ঘটনার সংবাদ পেয়ে বদরখালী পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত ইনচার্জ এস আই মো.ইসমাঈল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আহত বয়োবৃদ্ধা মোকতার আহমদ জানান, বিরোধীয় জায়গাটি বদরখালী সমিতি সৃষ্টিলগ্নে থেকে পৈত্রিক ভাবে তারা ভোগ দখল করে আসছিল। তাদের নিকট আত্বীয় সিরাজুল হকের ছেলে আবু বক্কর দীর্ঘদিনের ওই দখলীয় জায়গায় তার ক্রয়কৃত জায়গা দাবী করে জোরপূর্বক ভাবে রাতের আধাঁরে দখল করে মাঠি কেটে ঘেরা-বেড়া দেয়। সকালে ওই জায়গায় গাছের চারা রোপন করলে এতে নিষেধ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এ সময় আমাকে উদ্ধার করতে গেলে তারা আমার সন্তান, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও তার ছেলেসহ ৫জনকে বেদড়ক মারধর করে কুপিয়ে জখম করেছে। অপর দিকে হামলায় আহত সিরাজুল হকের ছেলে আবু বক্কর দাবী করে বলেন, যে জায়গা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে মূলত জায়গার প্রকৃত মালিক হিসেবে আমার পিতারও অংশ রয়েছে। ওই জায়গার মধ্যে থেকে আমার পরিবার বদরখালী সমিতির সমবায় আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী মোকতার আহমদ গং থেকে প্রায় ৮০শতক জায়গা ক্রয়করেন। বিরোধপূর্ণ এ জায়গা নিয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শনিবার সকালে তারা দলবদ্ধ হয়ে আমার ক্রয়কৃত ও ভোগদখলীয় জায়গায় ঘেরা-বেড়া ভাংচুর চালায়। এতে বাধা দিতে গেলে আমিসহ, আমার মা, বোন, চাচীকে বেদড়ক মারধর করে ও আমাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এ হামলার ঘটনা নিয়ে দু’পক্ষের মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তাদের পরিবারের লোকজন জানায়।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।##
পাঠকের মতামত: