ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় আধিপত্য বিস্তারে বাঁধার জেরে অস্ত্রধারীদের হামলা: কুপিয়ে জখম

নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় কোনাখালী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অস্ত্রধারী দুবৃর্ত্ত ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় অস্ত্রধারী দুবৃর্ত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রতিপক্ষের লোকজন ছাড়াও স্থানীয় এলাকাবাসী আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনকে উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার রাত আনুমানিক দশটার দিকে কোনাখালী ইউনিয়নের করিমিয়া উচ্চ বিদ্যালয় লাগলো মাঠে ঘটেছে এ ঘটনা। এদিকে তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে নিকটস্থ মাতামুহুরী পুলিশ ফাড়ির একটি পুলিশদল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেন। তবে ওইসময় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসি জানিয়েছেন, উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার মুত মোস্তাক আহমদের ছেলে আলাউদ্দিন ও সালাহ উদ্দিন দুইভাই প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে নিয়ে র্দীঘদিন ধরে এলাকার আধিপত্য বিস্তার করে আসছেন। এলাকার জায়গা-জমি বিক্রি, দখল বেদখল থেকে শুরু করে বিচার বাণিজ্য সবকাজে তাঁরা নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করতেন। এলাকাবাসির অভিযোগ, তাদের কাছে জিন্মি অবস্থায় আছেন এলাকার সবশ্রেণীর মানুষ। এমনকি তাদের ছত্রছায়ায় উঠতি বয়সের কিশোর গ্যাংয়ের একটি চক্র এলাকায় সবধরণের অপরাধপ্রবণতা চালিয়ে আসছে।
দুইভাই আলাউদ্দিন ও সালাউদ্দিনের বেপরোয়া অন্যায় অবিচারে অতিষ্ঠ হয়ে এবং সর্বশেষ একটি জায়গা দখলের ঘটনায় বাঁধা দেন কোনাখালী ইউনিয়নের ইউছুপের বাপেরপাড়া গ্রামের নাছির উদ্দিনের ছেলে নুরুল আবছার ও তার ভাই মো আকিরিজ। ওই ঘটনার জের ধরে শুক্রবার রাতে আলা উদ্দিন ও তার ভাই সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে অস্ত্রধারী দুবৃর্ত্তরা বাংলা বাজার থেকে এসে পুর্বে করিমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ এলাকায় হামলা চালায় অপমর্মে প্রতিবাদকারী দুই ভাই নুরুল আবছার (২১) ও মো আকিরিজ (১৯) এর উপর। এসময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দুই ভাইয়ের শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক কাটা জখম হয়।
আহত নুরুল আবছারের স্বজনরা দাবি করেছেন, ঘটনার সময় এলাকাবাসী এগিয়ে এসে হামলাকারী দুবৃর্ত্তদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। এসময় তারা এলাকাবাসীর উপরও চড়াও হন। পরে এলাকাবাসীর গনপিটুনিতে জখম হন হামলাকারী আলা উদ্দিন ও তার ভাই সালাউদ্দিন।
এলাকাবাসী দাবি করেন, গত তিনমাস আগে পশ্চিম কোনাখালী এলাকায় নুরুল আলম নামের এক জনের কাছ থেকে বেশকিছু চোলাই মদ ধরেন নয়ন ও শাকিল নামের দুই যুবক। এই মদ ধরার জের ধরে আলা উদ্দিন ও তার ভাই সালাউদ্দিন মিলে প্রকাশ্য দিবালোকে দুই যুবক নয়ন ও শাকিলকে কুপিয়ে জখম করে। তার আগে স্লুইস গেইটের জায়গা দখলে বাধা দেওয়ায় স্থানীয় হারুনর রশীদ নামের এক ব্যক্তির বিবাহিত মেয়ে রুমা আক্তারকে (২২) কুপিয়ে হাত কেট দেয় আলা উদ্দিন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অভিযুক্ত দুই ভাই আলা উদ্দিন ও সালা উদ্দিন একাধিক মামলার আসামি। তাদের মধ্যে হত্যা ডাকাতি, হত্যাচেষ্টা ও মারামারির ঘটনায় আলা উদ্দিনের বিরুদ্ধে সাতটি ও তার ভাই সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে।

এদিকে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অস্ত্রধারীদের দৌরাত্ম্য ও হামলার সর্বশেষ ঘটনাটা এলাকাবাসীর মাঝে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি)চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দুইটি পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক রাতে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিই। তিনি বলেন, এখনো থানায় কোনপক্ষ অভিযোগ দেয়নি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: