নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চকরিয়ায় চতুর্থ দফায় ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়িতে বেকায়দায় রয়েছে নৌকার প্রার্থীরা। উপজেলার ৮ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহীর পাশাপাশি দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন।
উপজেলার ৮ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ৬ বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নে হাসানুল ইসলাম আদর, কলিম উল্লাহ কলি, চিরিঙ্গায় জসিম উদ্দিন, জামাল হোসেন চৌধুরী, হারবাংয়ে ছৈয়দ নূর ও বমুবিলছড়িতে মো. কপিল উদ্দিন। এবারের ইউপি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ না নিলেও তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সুবিধাজনক অবস্থানেও রয়েছেন তারা।
জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০ ইউপির নির্বাচন তৃতীয় দফায় সম্পন্ন হয়েছে। চতুর্থ দফায় ৮ ইউপির নির্বাচন আগামী
২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠতি হবে। এ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেয়ে অনেকে বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তাদের কারণে এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থীরা বেকায়দায় রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে এসব বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিস্কারের দাবীও উঠেছে জোরালোভাবে। তাদের বহিস্কার না করলে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিকের প্রার্থীদের ভরাডুবির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও অনেকে মন্তব্য করেন।
বিদ্রোহীর পাশাপাশি আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মাঠে গণসংযোগ ও সভা সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে ৮ ইউনিয়নে বিএনপি ও জামায়াত সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।
খুটাখালী ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এসএম মনজুর আলম, জামায়াতের মুহাম্মদ আবদুর রহমান, ডুলাহাজারায় বিএনপি সমর্থিত মোস্তাফিজুর রহমান, জামায়াতের মাওলানা মো. গিয়াসউদ্দিন ও মাহবুবুর রহমান।
ফাঁশিয়াখালীতে বিএনপির এহেসানুল করিম, শওকত ইসলাম ও জামায়াতের মো. কুতুব উদ্দিন।
বরইতলী ইউনিয়নে বিএনপির জালাল আহমদ সিকদার, জামায়াতের মো.ছালেকুজ্জামান ও বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে বিএনপির আবদুল মতলব।
অপরদিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পর্যায়ের এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, দলের মধ্যে অন্তঃকোন্দল থাকায় নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে বিদ্রোহীরা প্রার্থী হয়েছেন। তাদের দমন করা না গেলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয়ের সম্ভাবনা রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, তৃতীয় দফায় কৈয়ারবিল ইউনিয়নে অনুষ্টিত হওয়া নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী জন্নাতুল বকেয়া রেখা শুধু ৯৯ ভোট পেয়েছেন। সারাদেশে সবচেয়ে কম সংখ্যক ভোট পেয়েছেন তিনি।
একইভাবে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে ১৪৫ ভোট পেয়েছেন নৌকার প্রার্থী মো. নাজেম উদ্দিন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, নৌকার প্রার্থীদের পক্ষে কাজ না করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত নির্বাচনে দলীয় কোন্দলের কারণে চকরিয়ার ১০ ইউপির মধ্যে ৫টির ভরাডুবি হয়েছে। একইভাবে চতুর্থ দফা নির্বাচনে ৮টির নির্বাচন চলছে। সেখানেও নৌকার বিরোধীতা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, নৌকার বিরোধীতা করলে তাদের তালিকা করে জেলা আওয়ামী লীগের কাছে পাঠানোর জন্য দলের প্রার্থীদের বলা হয়েছে।
পাঠকের মতামত: