এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
চারবছর আগে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবার পরও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস পাওয়া যাচ্ছিলো না। এই অবস্থায় জাতীয় পরিচয়পত্র বঞ্চিত হচ্ছিলেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের মাইজ কাকারা এলাকার বাসিন্দা আবদুল করিমের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধি মোহাম্মদ খালেদ। এই পরিচয়পত্রের কারণে একজন শাররীক প্রতিবন্ধি হয়েও সরকারি সবধরনের সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খালেদ।
এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের আইডিইএ প্রকল্প (২য় পর্যায়) জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের প্রকল্প পরিচালকের কল্যাণে অবশেষে চারবছর পর জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পেয়েছে প্রতিবন্ধি খালেদ। গতকাল বুধবার (৮ মার্চ) বিকালে উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের মাইজ কাকারা বাড়িতে গিয়ে প্রতিবন্ধি খালেদ ও তার মায়ের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র তুলে দিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও জেপি দেওয়ান ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো শহিদুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.সাহাব উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অহিদুজ্জামান অহিদ এবং সুধীজন।
জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধি খালেদ ২০১৯ সালে তিনি বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে উল্লিখিত ঠিকানায় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। যার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর-১৫১৪৯৯৯৪১৪।
কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো সাহাব উদ্দিন বলেন, ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেও পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাচন অফিসে প্রতিবন্ধি খালেদ এর জাতীয় পরিচয়পত্র বা তার কোন ডকুমেন্টস পাওয়া যাচ্ছিলো না। এরপর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনে তার জাতীয় পরিচয় পত্রটি ভোটার তালিকা যাচাইলিংকে যাচাই করলেও কোন তথ্য পাওয়া পাইনি।
তবে আশার কথা হলো চকরিয়া উপজেলার কৃতি সন্তান নির্বাচন কমিশনের আইডিইএ প্রকল্প (২য় পর্যায়) জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের প্রকল্প পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম এর সার্বিক সহযোগিতায় অবশেষে দীর্ঘ চারবছর পর প্রতিবন্ধি খালেদ জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) হাতে পেয়েছে। এই আইডি কার্ড প্রাপ্তির মধ্যে প্রতিবন্ধি খালেদ এখন থেকে সরকারি সবধরনের সহায়তা পাবে। অথচ আইডি কার্ড না থাকায় খালেদ এতদিন কিছুই পায়নি, একারণে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন বা কাকারা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দিতে চাইলেও তাকে কিছুই দিতে পারিনি।
বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.শহিদুল ইসলাম বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধি খালেদ, পিতা- আব্দুল করিম, মাতা- আয়েশা বেগম, ঠিকানা- মাইজ কাকারা, কাকারা, চকরিয়া, কক্সবাজার এর স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের সময় ২০১৯ সনে উল্লিখিত ঠিকানায় ভোটার
তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। যার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর-১৫১৪৯৯৯৪১৪ এবং উপজেলা অফিস হতে সার্ভার কপি সংগ্রহ করেন। কিন্তু তার
জাতীয় পরিচয়পত্রটি পাওয়া না গেলে তিনি নির্বাচন অফিসে এসে যোগাযোগ করেন। তার জাতীয় পরিচয় পত্রটি ভোটার তালিকা যাচাই
লিংকে যাচাই করলে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে কার্ড ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেমে যাচাইকালে দেখা যায় কার্ডটির বর্তমান Status Checked, Afis Status: Match Found।
তিনি বলেন, আবেদনকারী একজন প্রতিবন্ধী, আবেদকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রটি সিস্টেমের ত্রুটির কারণে একই নাম্বারের সাথে Match_Found দেখাচ্ছে। জাতীয় পরিচয়পত্রটি অনলাইনে না থাকার কারণে আবেদনকারী রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ
সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এই অবস্থায় ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রটি অনলাইনে সচল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এর দপ্তরে সুপারিশসহ আবেদন পাঠানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে চারবছর পর নির্বাচন কমিশনের আইডিইএ প্রকল্প (২য় পর্যায়) জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের প্রকল্প পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম এর সার্বিক সহযোগিতায় অবশেষে দীর্ঘ চারবছর পর প্রতিবন্ধি খালেদ জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) হাতে পেয়েছে। এই আইডি কার্ড প্রাপ্তির মধ্যে প্রতিবন্ধি খালেদ এখন থেকে সরকারি সবধরনের সহায়তা পাবে। ##
পাঠকের মতামত: