ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ার ১৮টি ইউপিতে বিদ্রোহীদের চাপে নৌকার প্রার্থীরা বেকায়দায় !

Chakaria-up-nirbasan-19-3-16চকরিয়া অফিস:

চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন নিয়ে এখন উৎসবে পরিণত হয়েছে। চলছে প্রার্থীদের জোর প্রচার-প্রচারণা। ঘরে বসে নেই চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে। এরমধ্যে দ্বিতীয় ধাপে ২৩ এপ্রিল ১২টি এবং তৃতীয় ধাপে ৭মে ৬টি মোট ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একাধিক ইউপিতে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বেকায়দায় পড়েছেন। তবে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন হলে প্রতিদ্বন্দ্বি সব প্রার্থী জয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের ১৮জন নৌকা, বিএনপির ১৭জন ধানের শীষ, জাতীয় পার্টি (জাপা)-২ জন লাঙ্গল, জাতীয় পার্টি (জেপি)-১জন বাই সাইকেল এবং তিন ডজনের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলেও ১৮টির মধ্যে ১১টিতে আওয়ামীলীগ ও ৭টিতে বিএনপির প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু এবারের দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে প্রত্যেক ইউনিয়নে ২-৩জন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিপাকে পড়েছেন আওয়ামীলীগ। পাশাপাশি বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধেও একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।

নৌকা প্রতীকের একাধিক প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, চকরিয়া উপজেলার আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী এক নেতার অনুগত কিছু নেতা নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছেন। ওই নেতা বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকাও নিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এজন্য তিনি কাউকে সরিয়ে যেতে বলতে পারছে না।

chakaria-6-up-3-4-16এদিকে বরইতলী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়নপত্র পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান এটিএম জিয়া উদ্দিন চৌধুরী। সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে আওয়ামীগের বর্তমান চেয়ারম্যান আজিমুল হক নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। ওই ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা চকরিয়া কলেজের ভিপি রুস্তম শাহরিয়ার। সাহারবিল ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক মহসিন বাবুল পেলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি সরওয়ার আলম। ডুলাহাজারা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জামাল হোসেন। বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি মোক্তার আহমদ চৌধুরী। চিরিঙ্গা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন নৌকা প্রতীক পেলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান কেএম ছালাহউদ্দিন। কৈয়ারবিলে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ চৌধুরী। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন ইকবাল হোসেন ওরফে মক্কী ইকবাল। একইভাবে বিএনপির মধ্যেও বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে আবু তালেবকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দিলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মানিক। সাহারবিল ইউনিয়নে নুরুল আমিনকে ধানের শীষ দিলে মাঠে গণসংযোগ রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম। অপরদিকে সংখ্যালগু ভোটার অধ্যুষিত বরইতলী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এটিএম জিয়াউদ্দিন চৌধুরী জিয়া পড়েছেন বেশ বেকায়দায়। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। অন্যদিকে, ফাঁশিয়াখালী ও কাকারা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় বিএনপির প্রার্থীরা তেমন সুবিধা করতে পারছে না। এসব ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী কর্মকান্ডে মাঠে নেই দলীয় নেতা কর্মীরা।

পাঠকের মতামত: