স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া ::
আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালামকে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনা
কক্সবাজারের চকরিয়ার আলোচিত সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইন ও তার ১৪ সহযোগির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালামকে অপহরণ ও হত্যা চেষ্ঠার অভিযোগে তার বড় ভাই মহসিন বাবুল বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জুনাইদ নামে একব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি সাহারবিল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের নয়াপাড়া গ্রামের মৃত নুরুল কবিরের পুত্র।
এদিকে সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইনের বিরুদ্ধে ডাকাতি, চুরি, অসহায় মানুষের জমি দখল, সরকারি খাস জমি দখল, চিংড়িঘের দখল, প্রতিপক্ষের লোকজনকে মারধর ও হত্যা চেষ্ঠার অভিযোগ রয়েছে। তার নেতৃত্বে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে গরুচুরির অহরহ ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। নবী হোছাইন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মাতামুহুরী উপকূলীয় অঞ্চলের অপরাধের জগতের নেতৃত্বে দিচ্ছেন। রামপুর চিংড়িজোনে রাম রাজত্ব কায়েম করছেন নবী হোছাইন। অন্তত ১০ থেকে ১৫ হাজার একর চিংড়িঘের তার দখলে রয়েছে বলে জানান রামপুর কৃষি সমবায় ও উপনিবেশিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। সমিতির সদস্যরা তার কাছ থেকে দখল উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ ও মামলা দায়ের করেছেন।
এছাড়াও কোরালখালী এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলামের নিজস্ব জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ করেছে নবী হোছাইন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সাবেক সাংসদ জাফর আলমের ছত্রছায়ায় এসব অপকর্ম চালিয়ে যেতেন বলে জানান আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন বাবুল। তার এসবের প্রতিবাদ করলে উল্টো তাদেরকে হামলা ও মামলা দিয়ে নির্যাতন করতেন তিনি। বিগত সময়ে সাবেক সাংসদ জাফর আলম নবী হোছাইনকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে থানা বা আদালতে মামলা করার সাহস পায়নি ভূক্তভোগিরা। ফলে দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নবী হোছাইন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সাংসদ জাফর আলমের সমর্থক ছিলেন। তার ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে হাতঘড়ির সমর্থকদের উপর হামলা ও মামলা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে নবী হোছাইনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় বিভিন্ন অপরাধে অন্তত ১৩-১৫টি মামলা রয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন বাবুল জানান, ১৫ জানুয়ারি সকাল ৮টার দিকে পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের আটারকুম এলাকা থেকে অজ্ঞান অবস্থায় তার ভাই আবুল কালামকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। পরে তাকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে আবুল কালাম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর আগেরদিন রাতে তার আবুল কালামকে সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইনের নেতৃত্বে ১২-১৪ জনের একদল সন্ত্রাসী অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন আবুল কালাম। পরে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
গত ১৭ জানুয়ারি চকরিয়া থানায় নবী হোছাইনকে প্রধান আসামী করে মহসিন বাবুল বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জুনাইদুল হক নামে একব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আবুল কালামকে হামলা ও মারধরের ঘটনায় তার ভাই মহসিন বাবুল মামলা দায়ের করেছেন। এঘটনায় জুনাইদ নামে একব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
পাঠকের মতামত: