ঢাকা,শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চকরিয়া উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক কছিরসহ তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা

নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া ::  চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সস্পাদক কাউছার উদ্দিন কছিরসহ তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে চকরিয়া উপজেলা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গত ৩ ফেব্রুয়ারি বীর মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট আবুল কালামের মেয়ে হাসিনা বেগমের কাছ থেকে চাঁদা দাবী ও বসতভিটা দখলের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত ।

গ্রেফতারী পরোয়ানাপ্রাপ্ত যুবলীগ নেতা কছির ছাড়াও তার ভাই চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আব্বাছ উদ্দিন ও মোহাম্মদ খোকন। তারা চকরিয়া পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাহারিয়াঘোনার বাসিন্দা মৃত ঠান্ডা মিয়ার পুত্র।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট আবুল কালামের মেয়ে হাসিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ভরামুহুরী মৌজায় ২০১২ সালে স্থানীয় কবির আহমদের কাছ থেকে ১১.৩৩ শতক জমি ক্রয় করি। জমি ক্রয়ের পর থেকে দুটি সেমি পাকা বাড়ি নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই জায়গাতে একটি দুইতলা বাড়িও রয়েছে। সেখানে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছি। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমার বসতভিটার উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসার উদ্দিন কছির তার ভাই সাবেক যুবলীগ সভাপতি আব্বাছ উদ্দিন ও মোহাম্মদ খোকনের।  তারা বসতভিটা দখল নিতে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিতে থাকেন। ওইসময় সশস্ত্র অবস্থায় বাড়িতে এসে জমি দখলের চেষ্টা চালায়। এতে তাদেরকে বাধা দিলে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে হুমকি দেন। একপর্যায়ে ২০১৫ সালের ৪ মে রাত ১১টার দিকে তাদের দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় যুবলীগ নেতা কছির তার ভাই আব্বাছ ও খোকনের নেতৃত্বে সশস্ত্র লাঠিয়াল বাহিনী বসতভিটায় থাকা দুটি বাড়ির মধ্যে একটি দখল করে নেয়। এরপর সেখানে হামলা ও ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে তারা। ওইসময় কছিরসহ তার ভাই আব্বাছ ও খোকনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিলেও তৎকালিন সাবেক সাংসদ জাফর আলমের প্রভাবে আর অগ্রগতি হয়নি। পরবর্তী ২০২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি বীর মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট আবুল কালামের মেয়ে হাসিনা বেগম বাদি হয়ে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যুবলীগ নেতা কাউসার উদ্দিন কছির তার ভাই আব্বাছ উদ্দিন, মোহাম্মদ খোকন, মোছাম্মত রাফি ও জান্নাত বেগমের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সিআর ২৩০/২৪। ওইসময় আদালত মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ২০২৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর চকরিয়া থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা অবৈধভাবে থাকার সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। এর প্রেক্ষিতে গত ৩ ফেব্রুয়ারি চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বাদি হাসিনা বেগম আরও জানান, মামলা করার পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে যুবলীগ নেতক কছির তার ভাই আব্বাছ উদ্দিন ও খোকন। তারা প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। বর্তমানে যুবলীগ নেতা কছির এখনো বাড়ি দখল ছাড়েনি। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত পক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে তাদের বক্তব্য পাওয়া গেলে তা গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করা হবে।

পাঠকের মতামত: