ঢাকা: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নাশকতার মামলার পর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা প্রমাণ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়াকে ভয় পায়।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিক্রিয়া জানান দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্যের কারণে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এক আইনজীবীর করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আমলে নিয়ে সমন জারি করেছেন আদালত। আগামী ৩ মার্চ তাকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। ঢাকার মহানগর হাকিম মো. রাশেদ তালুকদার সোমবার ওই আদেশ দেন।
গতকাল সোমবারই ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দণ্ডবিধির ১২৩(ক)/১২৪(ক)/৫০৫ ধারায় মামলাটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন আহমদ। তিনি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদেরও সদস্য। এর আগে তিনি মামলা করার জন্য নিয়মানুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেন।
মামলার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নাশকতার মামলার পর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা এটাই প্রমাণ করে যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়াকে ভয় পায়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের অভিযোগ, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায় সরকার। তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ১০টি মামলা হয়েছে।
মির্জা ফখরুলের ভাষ্য, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী দলকে নির্মূল করার ভয়াবহ চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের অভিযোগ, বাংলাদেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য বিরোধী দল, বিশেষ করে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং দলের হাজারো নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে সরকার গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মির্জা ফখরুলের ভাষ্য, রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হওয়ার মতো কিছু খালেদা জিয়ার বক্তব্যের কোথাও ছিল না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের অভিযোগ, সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার এই মামলা করেছে। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য এ ধরনের মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ প্রমুখ।
গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। আজকে বলা হয়, এত লাখ লোক শহীদ হয়েছে। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।” বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে খালেদা জিয়া দাবি করেন, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।
পাঠকের মতামত: