সালাম কাকলী, মাতারবাড়ী ::
সাগর দ্বীপ মহেশখালী আলোচিত মাতারবাড়ী ইউনিয়নের কয়লা বিদ্যুতের ২য় প্রকল্প এলাকার চিংড়ী, লবণ ও ধান চাষীদের প্রাণ যায় যায় অবস্থা হয়েছে। চলতি চিংড়ী মৌসুমে হাছিমা কাটা, হরলিয়া ঘোনা ও ব্যাঙ্গ ঘোনার চিংড়ী চাষীদের কপালে এবার হাত পড়েছে। তা একমাত্র কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের অগোচালো পরিকল্পনার কারণে।
মাতারবাড়ীর সিকদার পাড়ার বাসিন্দা হাজী নুর আহমদের পুত্র মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এবং মাতারবাড়ী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম আক্ষেপ করে জানান গেল অন্যান্য বছর আমিসহ অত্র এলাকার চিংড়ী ঘের পরিচালক ও চিংড়ী চাষের সাথে সংশ্লিষ্টরা উল্লেখিত চিংড়ী ঘের থেকে লাখ লাখ টাকা লাভবান হয়ে আসছিলাম। এছাড়া আমাদের পরিবারের পুরো সংসার চিংড়ী আয়ের উপর নির্ভর। গেল বছর আমি হাছিমা কাটা ঘেরটিতে চিংড়ী চাষ করে প্রায় ৩০ লাখ টাকা লাভবান হয়েছিলাম। কিন্তু হাছিমা কাটার উত্তর পার্শ্বে ২য় বিদ্যুৎ প্রকল্পের সিমানার দক্ষিণ পার্শ্বে কয়লা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ একটি পূর্ব পশ্চিমে অপরিকল্পিত বাঁধ দেয়ায় চলতি বর্ষা মৌসুমে ঘেরের পানি সময়মত সেচ-নিস্কাশন করতে না পারায় এবছর আমি পুঁজির শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মূলধন অর্থাৎ পূঁজি উত্তোলন করতে পারিনাই। ফলে আমি ঋণের ভারে ঝরঝরিত। আমার মতো হরলিয়া ঘোনা ও ব্যাঙ্গ ঘোনা ঘোনার মালিকরাও পূঁজি উত্তোলন করতে ব্যার্থ হয়েছে। এই দায় কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের নিতে হবে। এ ছাড়া হাছিমা কাটা দক্ষিণে ৩০০০ একর কৃষি জমি পুরো বর্ষা মৌসুমে ডুবে থাকায় ধান চাষীদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। অপরিকল্পিত বাঁধের কারণে সামনে লবণ মৌসুমেও ব্যাপক ক্ষতি হবে লবণ চাষীদের। চিংড়ী ও কৃষকদের এধরনের বড় ক্ষতি হওয়ার একমাত্র কারণ চিংড়ী, লবণ ও কৃষক এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় না করে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে মনগড়া বাঁধ দেয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। উত্তর পার্শ্বে প্রস্তাবিত কয়লা বিদ্যুত প্রকল্পের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টদের ভূল শোধরানো এবং অত্র এলাকার চিংড়ী, লবণ ও ধান চাষীদের অপূরণীয় ক্ষতি সংশোধনের একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে অত্র এলাকার লোকজনের সাথে সমন্বয় করা। অন্যথায় এলাকার লোকজন দিন দিন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ফূঁসিয়ে উঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
পাঠকের মতামত: