অনলাইন নিউজ ডেস্ক :::
সংকট যেন পিছু ছাড়ছে না বিএনপির। এবার রাজধানীর নয়াপল্টনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কার্যালয় নিয়ে নতুন সংকটে পড়েছে দলটি। যখন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার বিচার নিয়ে প্রতিনিয়ত আশঙ্কায় রয়েছেন নেতাকর্মীরা, তখন কার্যালয় নিলামে ওঠার খবরে তাদের মধ্যে নতুন করে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কীভাবে কার্যালয় রক্ষা করা যায়, তার উপায় খুঁজতে ব্যস্ত বিএনপির আইনজীবী ও নেতারা। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে খালেদা জিয়া আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। কার্যালয়ের বিষয়টি নিয়ে আইনিভাবে মোকাবিলার প্রস্তুতি চলছে দলটিতে। ইতোমধ্যে আদালত থেকে এ মামলার কাগজপত্র সংগ্রহ করে আইনজীবীরা পর্যালোচনা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দলের বহিষ্কৃত স্থায়ী কমিটির সদস্য চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী অন্য একজনের সঙ্গে যৌথভাবে ১৯৮০ সালের দিকে ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে রাজধানীর ২৮/১ নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দলিল ইকুইটেবল মর্টগেজ হিসেবে জমা দেন। ঋণ নিয়ে আর পরিশোধ করেননি। সেই সময় তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। সেই সূত্রে দলের সব হিসাব-নিকাশ এবং কার্যালয়ের পাঁচতলা ভবনের দলিলপত্র তার কাছে ছিল। এ সুযোগে তিনি দলীয় কার্যালয়ের মূল দলিল ব্যাংকে বন্ধক রাখেন। কিন্তু ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না করায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর গুলশানের বাড়িসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নিলামে তুলে অর্থ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালতে মামলা করে, যা বর্তমানে রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে।
সূত্রমতে, ১৯৭৯ সাল থেকে নয়াপল্টনের ওই ভবনটি দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছে বিএনপি। ওই সময় জিয়াউর রহমান এটি কিনলেও তখন দলিল করা হয়নি। পরে ’৯৩ সালে ভবনটির আগের মালিক ফখরুদ্দিন কার্যালয়টি দলিল করে দেন বিএনপিকে। তখন এটি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে দলিল করা হয়। নামজারি থেকে শুরু করে সব কিছুই এ নামে রয়েছে। কিন্তু দলিলের সময় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়টি গোপন রাখেন ফখরুদ্দিন।
ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে বলা হচ্ছে, প্রচলিত রীতি অনুযায়ী খেলাপি ঋণ উদ্ধারের জন্য অর্থঋণ আদালতে মামলা করে বন্ধক রাখা সম্পদ বিক্রির মাধ্যমে অর্থ আদায় করা হয়। সে নিয়মে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির সাবেক নেতা চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর গুলশানের বাসভবন এবং নয়াপল্টনের পাঁচতলা ভবনটি বিক্রি করে পাওনা আদায় করবে।
এ বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, কার্যালয় বাঁচানো কঠিন কিছু হবে না। আদালত থেকে মামলার কাগজপত্র সংগ্রহ করে দেখা হচ্ছে। এই মামলায় কোনো সমস্যা হবে না। বিএনপির কার্যালয় বিএনপিরই থাকবে।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও স্থায়ী কমিটির অনুমোদন ছাড়া আইনগতভাবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দলিল কেউ বন্ধক রাখার ক্ষমতা রাখেন না। তাই আইনিভাবে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী এটি পারেন না। এ বিষয়ে আমরা আইনগত প্রস্তুতি নিচ্ছি।
পাঠকের মতামত: