ঢাকা,বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

করুণা চাই না, ত্রাণ চাই না, চাই স্থায়ী বেড়িবাঁধ

gomatoli veribad picসেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :::

আমরা কারো করুণা চাই না, ত্রাণ চাই না। আমরা চাই স্থায়ী বেড়িবাঁধ। পোকখালী স্লুইচগেইট থেকে ৬ নং স্লুইচ পর্যন্ত স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে আমাদের অবশিষ্ট জমি,স্কুল-মাদ্রাসা,মসজিদ-কবরস্থান,বাড়ি-ঘর রক্ষা করা হোক। কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো এভাবেই নিজেদের দাবি তুলে ধরেন।

রোয়ানু-মোরায় বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন কবলিত এলাকা সরজমিন পরিদর্শনে গেলে কথা হয় মাষ্টার আয়ুব আলীর সাথে তিনি বলেন, ৬ নং স্লুইচের বেড়িবাঁধ ভাঙনে এখানকার হাজার পরিবার গৃহহারা হয়। তখন কেউ রাস্তার ধারে, আবার কেউ কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করি। ওই সময় সরকারী-বেসরকারীভাবে আমাদের ত্রাণ দেয়া হয়। তাও যথেষ্ট নয়। সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের লোকজন অমুক করে দেব, তমুক করে দেব বলে চলে যায়। কাজের কাজ কিছুই হয়না। আমরা ত্রাণ চাই না, চাই গোমাতলীতে স্থায়ী বেড়িবাঁধ, স্থায়ী সমাধান।

গেল রোয়ানু-মোরা ঘূর্ণিঝড়ের জোয়ারের পানিতে গোমাতলী বেড়িবাঁধটি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। মহেষখালী নদী তীরের এই বেড়িবাঁধটি বর্তমানে ভাঙতে ভাঙতে একেবারে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে এই বাঁধটি টেকসই বাঁধে রূপান্তর করা না হলে গোমাতলী রাজঘাট সড়কটি ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।

এদিকে গোমাতলীর ]বেড়িবাঁধটির এমন দুরবস্থায় শতাধিক বসতি পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। এসব পরিবার বর্তমানে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এখন এই বেড়িবাঁধটি যদি রক্ষা না হয় তাহলে ভবিষ্যতে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে এখানকার মানুষের জন্য।

পোকখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিক আহমদ জানান, বেড়িবাঁধের ৬ নং স্লুইচ গেইট পয়েন্টের বিশাল অংশ ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে। এতে চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে ওই এলাকার বহু বসতবাড়ি ও স্থাপনা। যে কোন মুহূর্তে এই বাঁধের অবশিষ্টাংশ তলিয়ে গেলে বৃহত্তর গোমাতলী মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।

ইউনিয়নের ৭নং ওর্য়াড় মেম্বার মাহমুদুল হক দুখু মিয়া বলেন, গোমাতলী বেড়িবাঁধ কাম সড়কের ওপর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু দুদফে ঘূর্ণিঝড়ের জোয়ারের পানিতে একটু একটু ভাঙতে ভাঙতে বর্তমানে একেবারে ভয়াবহতায় রূপ নিয়েছে ভাঙন। তাই এই বেড়িবাঁধটি টেকসইভাবে নির্মাণ করা না গেলে সামনে আমাদের জন্য বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম রহিম উল্লাহ বলেন, কউক চেয়ারম্যান (অব:) কর্নেল ফোরকান আহমদ এবং আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই বেড়িবাঁধটি নিয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। তাদেরকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি, এই বাঁধটি রক্ষা করা না গেলে বৃহত্তর গোমাতলীবাসী বড় ধরনের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা বেড়িবাঁধটি টেকসইভাবে নির্মাণে কাজে হাত দিয়েছেন।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান বলেন, গোমাতলী বেড়িবাঁধের ৬ নং স্লুইচ গেইট পয়েন্ট যে কোন ভাবেই রক্ষা করতে হবে। তা না হলে নদীতে সড়ক-উপসড়ক আরোও বিলীন হয়ে যাবে। তাই জরুরী কাজের বিপরীতে এই বেড়িবাঁধের টেকসইভাবে কাজ শুরু করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: