স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার :: লাখো মানুষের অংশগ্রহণে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমীতে সৈকতের লাবণি পয়েন্টে দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
বিসর্জনের দিনে বুধবার বিকেলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে ভীড় করেছিল সকল সম্প্রদায়ের লাখো মানুষ। একে একে সৈকতের তীরে আনা হয় জেলার দুই শতাধিক প্রতিমা। তারপর বিকেল ৫ টা ২০ এর দিকে একে একে বিসর্জন দেয়া হয় প্রতিমা।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক বেন্টু দাশ বলেন, কক্সবাজারের ৩০৮টি পূজা মন্ডপে বিদায়ের সূর। সকালে দশমীবিহিত পূজা করে পূজার্থীরা। পূজা শেষে দেয়া হয় দর্পণ বিসর্জন। বিকেলে বিসর্জন দেয়া হয়েছে। কুতুবদিয়া-মহেশখালী ছাড়া বাকি মন্ডপগুলোতে থেকে প্রতিমা আনা হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে।
তিনি আরও জানান, পাশ্ববর্তী বান্দরবান জেলার কয়েকটি উপজেলা থেকেও প্রতিমা আনা হয়েছিল। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে সৈকতে এ উৎসবের সমাপনী হয়েছে।
এরআগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, সৈকতের সকল ধর্মের মানুষের জমায়েত বলে দেয়, এ দেশে জঙ্গীবাদের অবস্থান নেয়। মৌলভীবাদীরা এদেশে অরাজকতার প্রশ্রয় পায় না। একটি গোষ্ঠী বাংলার মানুষের সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতিতে আঘাত করছে। বার বার তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের প্রতিহত করছে। আশাকরি আগামীতে এ ধরণের গোষ্ঠী আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পুজারীদের ঢল নামে। তাদের নিরাপত্তার জন্য সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তরাও কাজ করেছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় প্রস্তুত। প্রতিটি পয়েন্ট সাদা পোশাকে কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটকদের সুবিদার জন্য সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশের হেল্পডেস্ক বসানো হয়।
আজ বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত সৈকতের বালুচরে রাখা দুর্গা প্রতিমা ঘিরে চলে ভক্তদের শেষ আরাধনা। শুধু তাই নয়, নাচে-গানে এক অন্যরকম আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকতে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে সমাগম ঘটে পর্যটকসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মানুষের।
পাঠকের মতামত: