বিশেষ প্রতিবেদক ::
কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নে বন বিভাগের মালিকানাধীন ২৫টি পাহাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। এতে গাছপালা উজাড় ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে।
রাতের বেলায় একটি ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট এভাবে পাহাড় কাটছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাহাড় কেটে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাটি সরবরাহ করা হলেও বন বিভাগ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
পিএমখালী সদর বনবিটের আওতাধীন ছনখোলা, পরানিয়াপাড়া, জুমছড়ি, কাঠালিয়ামুরা, তোতকখালী, তেতৈয়া, তাহের মোহাম্মদের ঘোনা, মুহসিনিয়া পাড়া, ধাওনখালীর ঘোনার পাড়া, ছনখোলার মালিপাড়া, ডিগিরঘোনার বিট, তোতকখালী বিটসহ অন্তত ২৫টি স্থানে গত শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে পাহাড় কাটার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বন বিভাগের পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পাহাড় কাটার সঙ্গে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট জড়িত। এই সিন্ডিকেটের একজন হলেন ওবাইদুল করিম নামের ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার। তাঁর সিন্ডিকেট ২৫টি পাহাড় সাবাড় করেছে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা আরও বলেন, পাহাড় কাটার দায়ে গত এক বছরে প্রায় ২০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৭০টি মামলা করেছে বন বিভাগ। পাহাড় কাটা বন্ধে বন বিভাগকে সহযোগিতার জন্য বিজিবি, কক্সবাজার সদর ইউএনও, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত শ্রমিকেরা পাহাড় কাটে। তারপর ২০-২২টি ডাম্পার দিয়ে মাটি সরবরাহ করা হয়। প্রতি ডাম্পার মাটি বিক্রি হয় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়।
কক্সবাজার শহরের আবাসিক ভবনের জন্য প্লট ভরাট, সরকারি–বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের নিচু জমি ভরাটের কাজে পাহাড় কাটার মাটি ব্যবহার হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা পাহাড় কেটে সাবাড় করছেন। কিন্তু রাতের বেলায় পাহাড় কাটায় বন বিভাগ কিছুই করতে পারছে না। অনেক ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, পিএমখালীর চারটি বনবিটের আওতাধীন ২০টির বেশি পাহাড় কাটার দায়ে ওবাইদুল করিমকে অন্তত সাতবার আটক করা হয়েছিল। জামিনে বেরিয়ে এসে তিনি পুনরায় পাহাড় কাটা শুরু করেন।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওবাইদুল করিম বলেন, তিনি একা পাহাড় কাটেন না, অনেকে কাটে। কিন্তু মামলা হয় তাঁর নামে। তবে সব মামলায় তিনি জামিনে আছেন।
পাঠকের মতামত: