ফারুক আহমদ, উখিয়া ॥
মাথায় কাফনের কাপড় পরে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের উখিয়ার কোটবাজার চৌরাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিবঞ্চিত শিক্ষিত শত শত যুবক। এ সময় তাদের সমর্থনে উখিয়ার হাজার হাজার সাধারণ মানুষও এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
সোমবার (৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও এনজিও’র গাড়ী প্রতিরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।
জানা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানীয়দের চাকরিতে অগ্রাধিকারের দাবি এনজিওগুলো তোয়াক্কা না করায় ‘অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি উখিয়ার’ উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও প্রতিরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।
কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের কোটবাজার চৌরাস্তায় মাথায় কাফনের কাপড় পরে অবস্থান নেন চাকরিবঞ্চিত শত শত বেকার যুবক। এ সময় তাদের সমর্থনে উখিয়ার হাজার হাজার মানুষও রাস্তায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
কর্মসূচি পালনকালে রাস্তার দু’ধারে হাজার হাজার যানবাহন আটকাপড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা প্রদানের চেষ্টা করলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এসময় পুলিশের লাঠি চার্জে আন্দোলনরত ২০ জন যুবক আহত হয় বলে দাবী করা হয়।
পরে উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের আশ্বাসের ভিত্তিতে এক সপ্তাহের আলটিমেটাম দিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দেয় অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি।
অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি উখিয়ার নেতৃবৃন্দরা বলেন, এক মাস আগে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন ও নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান চৌধুরী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিওদের স্থানীয়দের চাকরিতে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেন।
ওই সমন্বয় সভায় এ নিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে সময় বেঁধে দিলেও ওই এনজিওগুলো বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছে।
তারা কর্ণপাত না করে ঢালাওভাবে স্থানীয় ছেলেমেয়েদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করতে থাকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে নিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। আগামীতে আন্দোলন আরও তীব্র হলে এর সব দায়ভার এনজিওগুলোকে নিতে হবে বলে নেতারা কঠোর হুশিয়ারি দেন।
অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীদের উদ্দেশে উখিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফখরুল ইসলাম বলেন, আপনাদের আন্দোলন ও দাবির যৌক্তিকতা রয়েছে। আপনাদের সব দাবি মেনে নেয়া হবে।
ইতিমধ্যে আপনাদের বার্তা জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর মাধ্যমে শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। তিনি অবস্থান কর্মসূচি স্থগিতের অনুরোধ জানান আন্দোলনকারীদের।
প্রশাসনের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। দাবি আদায়ে আরও এক সপ্তাহ সময় দেয়া হচ্ছে এনজিওগুলোকে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক আসতে পারে বলে জানান বক্তারা। আন্দোলনকারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ইমরুল কায়েস চৌধুরী, শরিফ আজাদ প্রমুখ।
পাঠকের মতামত: