ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার উপকূলে জলদস্যুদের তাণ্ডব

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ট্রলার মালিক ও মাঝিমাল্লারা। গত এক সপ্তাহে অন্তত ৩০ টি ফিশিং ট্রলার জলদস্যুদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। এতে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য ৫০ জন মাঝি-মাল্লাকে জিম্মি করে রেখেছে জলদস্যুরা। বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের তান্ডব বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন ঘটছে ফিশিং বোট ও মাঝিমাল্লা অপহরণের, গুম, খুন ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা।

গত ৬ আগস্ট কুতুবদিয়া উপকূলের কাছাকাছি ১৫ টি ফিশিং ট্রলারে হানা দিয়েছে জলদস্যুরা। এতে অন্তত ৫০ জন মাঝি-মাল্লাকে জিম্মি করে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবী করছে। ফিশিং ট্রলারের মালিক আবুল কালাম জানিয়েছেন ইতিমধ্যে কোটি টাকার উপরে আমরা ঋণ নিয়েছি। ওই টাকা দিয়ে মাছ ধরার জন্য মাঝি-মাল্লারা ট্রলার নিয়ে সাগরে গিয়েছিল। এখন তারা সবাই জলদস্যুদের হাতে জিম্মি। তাদের দাবি মত টাকা দেওয়ার কোন সুযোগ আমাদের নেই। আমরা এখন নিঃস্ব প্রশাসনের সহযোগিতায় মাঝি-মাল্লাদের উদ্ধার করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। মায়ের দোয়া সেন্টারের মালিক নেজাম উদ্দিন জানিয়েছেন এখন আমরা অসহায়। দীর্ঘদিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকার পরে গত কয়েকদিন আগে সাগরে গিয়েছিল ফিশিং ট্রলার। এতেই আক্রান্ত হয়েছে জলদস্যু কতৃক। এখন আমরা কোথায় যাব আমাদের করার কিছু নেই। জলদস্যুদের বেপরোয়া তান্ডবে অতিষ্ট জেলেরা। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় বিগত ফেব্রুয়ারীতে টেকনাফের সমূদ্র থেকে ১৪টি মাছধরার ট্রলারসহ ৫৮ জেলেকে টেকনাফের সাগর এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যায় জলদস্যুরা।
জেলেদের জিম্মি করে তারা মোটা অংকের টাকা দাবি করে। পরে জেলেরা মুক্তিপণের টাকা পাঠাতে মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
প্রতি ট্রলার থেকে দেড় লাখ টাকা আদায় করে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। কক্সবাজার জেলা ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ জানান, ৬ আগস্ট আক্রান্ত ট্রলারগুলোর মধ্যে অধিকাংশই কক্সবাজারের।
আমরা ইতিমধ্যেই ডলারের মালিক এবং মাঝি-মাল্লাদের নাম সংগ্রহ করার চেষ্টা চালাচ্ছি। সম্প্রতি জলদস্যুদের উৎপাত বেড়েছে এতে মাছ ধরার পেশায় জড়িত সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সবাই বিপুল পরিমাণ ঋণ গ্রস্ত। কুতুবদিয়া থানার নবাগত অফিসার্স ইনচার্জ ওয়াহিদ হায়দার জানান এই বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি।

খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড কক্সবাজার ষ্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আলী আহমদ জানান, সাগরে কোন বোট ডাকাতি হলে নির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে অভিযানে যাওয়ার আগেই জলদস্যুরা জেনে যায়। ফলে অপারেশন সবসময় সফল হয়না। তিনি আরো বলেন, সাগরে জলদস্যু দমনে কোস্টগার্ড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে। আগামীতে অভিযান আরো জোরদার করা হবে। কোন জলদস্যু রেহাই পাবেনা।

পাঠকের মতামত: