সি এন ডেস্ক :: কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৯ম বোর্ড সভা কউক সভাকক্ষে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে: কর্নেল (অব:) ফোরকান আহমদ এর সভাপতিত্বে ২২ নভেম্বর ২০১৮ খ্রি: সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতেই গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ড. মনিরুল হুদা যুগ্মসচিব হিসেবে পদোন্নতি হওয়ায় শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
সভাপতি জানান যে বিগত ১৬ জানুয়ারী ২০১৮ ইং, ১০ তলা বিশিষ্ট কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অফিস ভবন একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে। তিনি অফিস ভবন নির্মানের বর্তমানে অবস্থা তুলে ধরেন এবং দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী গণপূর্ত বিভাগ, কক্সবাজার সহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। এছাড়াও তিনি বলেন কক্সবাজার শহরস্থ ঐতিহ্যবাহী লালদিঘী, গোলদিঘী ও বাজারঘাটা পুকুর পুনর্বাসনসহ ভৌত সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন লাভ করেছে এবং খুব শীঘ্রই টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ শুরু করা হবে। পর্যটন শিল্পের বিকাশসহ কক্সবাজারের সৌন্দর্য্যবর্ধনে তিনি সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় সভাপতি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে সদস্য (প্রকৌশল) লে: কর্নেল মোহাম্মদ আনোয়ার উল ইসলামকে বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান যে, ইতোমধ্যে কউক কক্সবাজারে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে মেরিন ড্রাইভ সড়কে আলোকায়ন প্রকল্প-১ এর আওতায় (দরিয়া নগর হতে হিমছড়ি পর্যন্ত) রাস্তায় ১০০টি লাইট এবং সড়ক আলোকায়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় (কক্সবাজার শহর এলাকা) ৩০০টি লাইট লাগানো সম্পন্ন করা হয়েছে। পর্যটকদের আর্কষণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে শহরের ০৩টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভাস্কর্য্য নির্মাণ করা হয়েছে। যা ইতোমধ্যে পর্যটকসহ সাধারণ জনগণের মাঝে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে। উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে বোর্ড সদস্যবৃন্দ সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, কক্সবাজারকে একটি আধুনিক ও আকর্ষনীয় পর্যটন নগরী গড়ে তোলার জন্য একটি কার্যকরী মাষ্টার প্ল্যান প্রনয়নের কাজ দ্রুত শুরু হবে। এছাড়া কক্সবাজারে আবাসন সমস্যা নিরসনকল্পে কউক কর্তৃক কক্সবাজার সদর উপজেলায় “কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আবাসিক ফ্ল্যাট উন্নয়ন প্রকল্প-১” শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যা বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের পর্যায়ে রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য গৃহীত প্রকল্পের মধ্যে হলিডে মোড়-বাজারঘাটা-লারপাড়া (বাসষ্ট্যান্ড) প্রধান সড়ক সংস্কারসহ প্রশস্তকরণ প্রকল্পটি বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে এবং সুগন্ধা মোড়-সুগন্ধা পয়েন্ট-লাবনী পয়েন্ট সংযোগ সড়ক প্রশস্তকরণ ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পটি প্রি-একনেক সভায় উত্থাপনের অপেক্ষা আছে। বোর্ডের সদস্যগণ অতি অল্প সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষের এই সফলতা কে সাধুবাদ জানান এবং কউকের সকল উন্নয়ন কাজে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশাাবদ ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য যে, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের আর্থিক হিসাব একটি সিএ ফার্মের মাধ্যমে অডিট সম্পন্ন করা হয়েছে। যা বোর্ড সভায় উপস্থাপন কর হয় এবং বোর্ড সদস্যবৃন্দ অনুমোদন প্রদান করেন।
সভাপতি জানান যে, উপরোক্ত প্রকল্প ছাড়াও কক্সবাজারকে আধুনিক ও পরিকল্পিত পর্যটন নগরী বাস্তবায়নের নিমিত্তে নি¤েœাক্ত প্রকল্প গুলো গ্রহণ করা হয়েছে, (ক) বাঁকখালী নদী সংলগ্ন ১৫০ ফুট প্রশস্ত সবুজ বেস্টনীসহ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, (খ) হিল ডাউন সার্কিট হাউস – আনবিক শক্তি কমিশন পর্যন্ত বিকল্প সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, (গ) কক্সবাজারস্থ কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ফ্ল্যাট উন্নয়ন প্রকল্প-১, (ঘ) রহমানিয়া মাদ্রাসা হতে জেলখানা পর্যন্ত সংযোগ সড়ক র্নিমাণ প্রকল্প (ঙ) কালুর দোকান হতে লাইট হাউজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ। প্রকল্প সমূহ বাস্তবায়নের ফলে কক্সবাজারে পর্যটন শিল্প বিকাশে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপস্থিত বোর্ড সদস্য বৃন্দ কউকের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং সকলে সার্বিকভাবে সহযোগিতার আশ^াস প্রদান করেন।
বোর্ড সভায় উপস্থিত ছিলেন লে. কর্নেল মোহাম্মদ আনোয়ার উল ইসলাম, সদস্য (প্রকৌশল), কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ড. মো: মনিরুল হুদা, যুগ্ম সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, আবু জাফর রাশেদ, সচিব, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জহির উদ্দিন আহমদ, নির্বাহী প্রকৌশলী, গণপূর্ত বিভাগ, কক্সবাজার মীর মঞ্জুরুর রহমান, উপ-প্রধান স্থপতি, স্থাপত্য অধিদপ্তর, মো: সায়েদ ইকবাল, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার, রোকসানা বিনতে সামাদ, সহকারী অধ্যাপক, চুয়েট, বাবুল চন্দ্র বণিক, এ.এস.পি (ট্রাফিক), কক্সবাজার, আবু মোর্শেদ চৌধুরী, সভাপতি কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স, ডা. সাইফুদ্দিন ফরাজি, সদস্য, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম, এডভোকেট প্রতিভা দাশ প্রমূখ।
পাঠকের মতামত: