ঢাকা,মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে শুস্ক মৌসুমে চিংড়ি চাষে সাফল্য 

আতিকুর রহমান মানিক ::

কক্সবাজার জেলাব্যাপী সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় শীতকালীন বাগদা চিংড়ি চাষে সফলতা লাভ করেছেন খামারী-উদ্যোক্তারা। সদ্যগত শীতকালে উপকূলীয় এলাকায় লবনাক্ত পানির বিভিন্ন প্রজেক্টে চাষকৃত বাগদা চিংড়ি এখন আহরণ উপযোগী হয়েছে। এসব চিংড়ি এখন বাজারজাত করা হচ্ছে ও দামও ভাল পাওয়া যাচ্ছে।

বর্ষা মৌসূমের পাশাপাশি শুস্কমৌসুমে বাগদা চিংড়ি চাষ করে সফল হওয়ায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সঞ্চার হয়েছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।

উদ্যোক্তা ও চাষীরা বলেন, এতদিন কেবলমাত্র বর্ষাকালীন চাষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল চিংড়ি উৎপাদন। সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় একই জমিতে ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত শুস্ক মৌসুমে লবণ চাষ ও মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে বাগদা চিংড়ি চাষ করা হত। এতদিন এটাই ছিল প্রথাগত চাষ মৌসুম গত ডিসেম্বর মাসে চিংড়ি মৌসূম শেষ হলে লবন চাষের জন্য ঘের শুকিয়ে ফেলা হয়৷ কিন্তু চিংড়ি ঘেরের আভ্যন্তরীন বিভিন্ন খাল ও নালায় পানি রেখে দেন চাষীরা৷ এরপর এতে চিংড়ি পোনা অবমুক্ত করে শুরু হয় শীতকালীন চাষ।

কয়েকমাস আগে লবণ মৌসুম শুরু হলে লবণ চাষের পাশাপশি এভাবে চিংড়ি চাষ শুরু করেন মহেশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, উখিয়া, টেকনাফ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন উদ্যোক্তা ও খামারীরা। মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়ার চিংড়ি চাষী আমির খান বলেন মাটি কাটা, পাড় মেরামত ও অপরাপর সব প্রস্তুতির পর প্রজেক্টে পোনা অবমুক্ত করা হয়। ৩ মাস আগে ছাড়া এসব পোনা এখন আহরণ উপযোগী বাগদা চিংড়িতে পরিণত হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ এলাকার উদ্যোক্তা আলী হোসেন বলেন, লবন মাঠের মধ্যবর্তী খালে চাষকৃত বাগদা চিংড়ি এখন আহরন করা হচ্ছে। চকরিয়া উপজেলার বদরখালীর চাষী এনায়েত জানান, শীতকালীন চাষে বাগদা চিংড়ির পাশাপাশি আরো কয়েক প্রজাতির চিংড়ি ও অন্যান্য মাছও উৎপাদিত হয়েছে।

চিংড়ির পাশাপাশি সাথী ফসল হিসাবে উৎপাদিত কোরাল, বাঠা (মুলেট ফিশ), দাতিনা, ধুম ও টেংরা মাছ এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। কক্সবাজার শহরের ভোক্তা জুয়েল জানান, বর্ষা মৌসূমের ঘেরের মাছ এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, তবে দাম একটু বেশী।

বাগদা চিংড়ি চাষ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্রিসেন্ট এ্যাকোয়া কনসালটেন্সি সূত্রে জানা যায়, ঘের প্রস্তুতির পর মাটি-পানি পরীক্ষা করে  চুন ও সার প্রয়োগ করার পর ঘেরে সুস্থ-সবল মানসম্মত পোনা মজুদ এবং মজুদ পরবর্তী নিয়মিত পরিচর্যা, খাদ্য প্রয়োগ, পানির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পানির গভীরতা রক্ষাসহ সার্বিক পরিচর্যা করলে অল্প সময়েই ফসল তোলা সম্ভব।

সদর উপজেলার গোমাতলীর চিংড়ি চাষী ও উদ্যোক্তা হান্নান মিয়া বলেন, শীতকালীন চিংড়ি চাষে এ সফলতা এতদাঞ্চলের চাষীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ- উদ্দীপনার সঞ্চার করেছে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (সদর) ড. মঈন উদ্দিন আহমদ বলেন, চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে চাষীদেরকে যাবতীয় প্রযুক্তিগত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: