ঢাকা,মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে “রোহিঙ্গা সংস্কৃতির পুনর্জন্ম ও যাত্রা” প্রদর্শনী শুরু

প্রেস বিজ্ঞপ্তি :: জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর, আন্তর্জাতিক সংস্থা আর্টোল্যুশন, তের দেজম (Terre des Hommes) ও কক্সবাজার আর্ট ক্লাবের সহযোগিতায় মঙ্গলবার “রোহিঙ্গা রসমর ফিত্তি দুওরঃ ছৌফার” অর্থাৎ “রোহিঙ্গা সংস্কৃতির পুনর্জন্মঃ যাত্রা” শিরোনামে দুই-দিনব্যাপী এক চিত্র প্রদর্শনী শুরু করেছে। প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে কক্সবাজারের ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আঁকা বিভিন্ন পেইন্টিং, যার মাধ্যমে বিভিন্ন বয়সের রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষদের চোখে দেখা তাঁদের জীবন উঠে এসেছে।

কক্সবাজারে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআর-এর প্রধান ইটা শুয়েট বলেন, “শরণার্থী ক্যাম্পের কঠিন জীবনে রোহিঙ্গারা গঠনমূলক উপায়ে তাদের আবেগ ও অনুভূতি প্রকাশের দারুণ এক উপায় খুঁজে পেয়েছে আর্ট অর্থাৎ শিল্পের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে তাদের মানসিক কষ্ট কমে, এবং এর পাশাপাশি ছবির মাধ্যমে তারা ধরে রাখছে তাদের সংস্কৃতি ও ইতিহাস”।
কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে চলমান এই প্রদর্শনীতে দেখা যাচ্ছে ৫টি বড় ও ১৩৫টি ছোট ক্যানভাস। এছাড়াও আছে কয়েক’শ ড্রয়িং, যার মাধ্যমে শরণার্থী শিল্পীরা তুলে ধরেছে তাদের প্রত্যয়। এই ছবিগুলো বলে রোহিঙ্গাদের আত্মপরিচয়, অতীতের কষ্ট, বর্তমানের চ্যালঞ্জ, এবং ভবিষ্যতের আশা ও স্বপ্নের কথা।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোঃ শামসুদ্দৌজা বলেন, “পাঁচ বছর পরও রোহিঙ্গারা নিজ সংস্কৃতি ভুলে যায় নি, আর এটা এই প্রদর্শনীতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। তরুণ রোহিঙ্গারা খুবই মেধাবী। এ ধরণের নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য সুফল বয়ে আনবে”।

আর্টোল্যুশনের বাংলাদেশে নিযুক্ত কান্ট্রি ম্যানেজার এ এস এম সুজা উদ্দিন বলেন, “ছোট-বড় ড্রয়িং ও ক্যানভাস মিলিয়ে আমরা এখন পর্যন্ত ৩০০০-এরও বেশি আর্ট তৈরি করেছি রোহিঙ্গা শিল্পীদের সাথে নিয়ে। এই ছবিগুলো সাহায্য করে তাদের মানসিক শান্তি ফিরে পেতে”।
মিয়ানমারে সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করেছে। তাদের অনেকে গত কয়েক দশকে কয়েক বার বাংলাদেশে শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছে। দুই-দিনব্যাপী এই চিত্র প্রদর্শনীতে দেখা যাচ্ছে কিভাবে শিল্পের মাধ্যমে এরকম একটি জনগোষ্ঠী নিজেকে ফিরে পেতে পারে, ও নিজস্ব সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ধরে রাখতে পারে।
তের দেজমের বাংলাদেশে নিযুক্ত কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মার্টিন সুইনচ্যাট বলেন, “এই চমৎকার প্রদর্শনী স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে কিভাবে শিল্পের মাধ্যমে মানুষ অতীতের শোক কাটিয়ে উঠে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে গড়তে পারে”।
ইউএনএইচসিআর, আর্টোল্যুশন, ও তের দেজম বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য কাজ করে যাবে; যেন তারা তাদের নিজেদের গল্প বিশ্বকে জানাতে পারে, এবং তাদের সম্মিলিত স্মৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারে।

পাঠকের মতামত: