বিশেষ প্রতিবেদক ::
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর কক্সবাজারের ৪টি সংসদীয় আসনের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৬৯ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর, পোস্টারে অগ্নিসংযোগ, নাশকতামূলক কর্মকান্ডের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৫ হাজারের অধিক নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে।
এসব মামলায় বিএনপি সমর্থক সাংবাদিক, প্রবাসী, হাজতি, শিশু ও পাগলসহ নিরপরাধ অনেককে আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। তাদের দাবি, এসব মামলায় এ পর্যন্ত ৫শত অধিক জনকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তছনছ করা হয়েছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর বসতঘর ও বাড়ির প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র।
বিএনপি নেতারা আরও দাবি করেন- মামলার পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আসামি হওয়া জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা এবং সক্রিয় কর্মীরা। এতে প্রচারণাসহ সব ধরনের কর্মকা- চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে প্রার্থীদের। জেলার চারটি আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও তাদের সমন্বয়কগণ অভিযোগ আকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী হাসিনা আহমদের একান্ত সহকারী সফওয়ানুল করিম জানান, তফসিলের পর থেকে পেকুয়া থানায় এ পর্যন্ত ৮টি মামলা হয়েছে। আর চকরিয়া থানায় হয়েছে ৭টি। এসব মামলায় পেকুয়ায় ৭-৮শ ও চকরিয়া থানায় প্রায় ৫শ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় তিনি নিজেসহ পাগল, প্রবাসী, কারান্তরীণসহ নিরীহ অনেককে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই উপজেলায় বিভিন্ন পার্যায়ের অর্ধশত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির দফতর স¤পাদক ইউছুফ বদরী জানান, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের মহেশখালীতে এ পর্যন্ত ৪টি মামলা হয়েছে। এতে আসামি হয়েছে তিন শতাধিক। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাসহ গ্রেফতার হয়েছেন ১৩ জন। কুতুবদিয়া থানায় নতুন কোনো মামলা না হলেও উপজেলা বিএনপির সাধারণ স¤পাদক মোবারক হোসেনসহ আটজনকে গ্রেফতার করে পুরোনো মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী লুৎফুর রহমান কাজলের একান্ত সহকারী দেলোয়ার হোসেন জানান, তফসিল ঘোষণার পর থেকে সদর ও রামুতে ধানের শীষ সমর্থক প্রায় সহস্রাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থকের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ২৬টি মামলা রুজু করা হয়েছে। এসব মামলায় ইতোমধ্যে দেড়শতাধিক জনকে গ্রেফতার করে কারান্তরীণ করা হয়েছে।
ধানের শীষের প্রার্থী কাজলের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ধানের শীষের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে রামু থানায় ১৮টি এবং কক্সবাজার সদর থানায় ৮টি মিথ্যা মামলা রুজু হয়েছে।
এতে ২৩ দলীয় জোটের নেতাকর্মীসহ ধানের শীষের প্রায় আড়াই হাজার কর্মী-সমর্থককে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় এই পর্যন্ত দেড় শতাধিক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরীর ছোট ভাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী জানান, তফসিলের পর থেকে এ পর্যন্ত উখিয়া থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৫টি মামলায় দুই শতাধিক জনকে আসামি করা হয়েছে। উপজেলা বিএনপি সাধারণ স¤পাদক সোলতান মাহমুদ চৌধুরীসহ ১৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ আসনে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কোন লোকই পাচ্ছেনা বলে স্থানীয় সুত্রগুলো জানিয়েছে। একইভাবে নির্বাচনের তফসীলের পর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বশেষ খবরে টেকনাফে পৃথক ১০টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় শতাধিক আসামী কারাগারে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো জানিয়েছে।
পাঠকের মতামত: