চকরিয়া নিউজ ডেস্ক ::
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম এমপিকে অব্যাহতির প্রতিবাদে চকরিয়ার মহাসড়কে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে দলীয় নেতাকর্মীরা। রাত ১০টার দিকে একদল যুবক লাঠি-সোটা নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। এসময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকান-পাট বন্ধ করে দ্রুত চলে যায়। এসময় পুরো শহর সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতংক ছড়িয়ে পড়ে।দিকবেদিক পালাতে থাকে সাধরণ পথচারী ও ব্যবসায়ীরা।
এ সময় সড়কের উভয়দিকে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে যাত্রীদের দূর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রাত দশটার দিকে পৌর শহরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় ক্ষুব্ধ জনতার উদ্দেশ্যে এমপি জাফর আলম বলেন, দলীয় সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। গঠনতন্ত্রপরিপন্থী সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। গাদ্দারি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা লড়ে যাব।
তিনি বলেন, সাবধান হয়ে যান। হয় আমি থাকব, না হয় মুজিব থাকবে। আর ছাড় দেয়া হবে না। জীবন দিয়ে হলেও আমরা রাজপথে থাকব।
জাফর আলম বলেন, দলের জন্য আমি জেল জুলমের শিকার হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে সিদ্ধান্ত দিবেন, তা মেনে নেব।
বিক্ষোভ শেষে একদল লাঠি-সোটা নিয়ে থানা রাস্তার মাথা থেকে মিছিল সহকারে পুরাতন বাসষ্টেশনের চলে যায়।
জয় বাংলা শ্লোগান ও জাফর ভাইয়ের কিছু হলে মুহুর্মুহ শ্লোগানে মহাসড়কের একাধিক স্থানে মহাসড়কের ওপর টায়ার জ্বালিয়ে এবং লাঠিসোটা হাতে নিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এসি ল্যান্ড মো. তানভীর হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ মহাসড়ক থেকে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সরিয়ে দিতে গেলেও তারা পিছু হটে। এখন রাত ১০টা ৪০ মিনিটে এ রিপোর্ট লেখা সময় লাঠি-সোটা নিয়ে একদল জাফর আলমের সমর্থক মেয়র মুজিবুর রহমান ও আতিক উদ্দিন চৌধিুরীর বিরোদ্ধে মাইকে গালি-গালাজ করকে করতে চিরিঙ্গা পুরাতন বাস ষ্টেশনের দিকে চলে যেতে দেখা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত গতকাল বিকেলে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা আওয়ামী লীগ চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে জাফর আলমের নির্বাচনী এলাকা চকরিয়া, পেকুয়া ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ জনতা রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করার সত্যতা নিশ্চিত করে চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, ‘মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার প্রায় ৩৯ কিলোমিটার মহাসড়কের একপ্রান্তের আজিজনগর এবং অপরপ্রান্তের খুটাখালী পর্যন্ত কিছুদূর পর পর অসংখ্য ব্যারিকেড দেয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা।’ ওসি বলেন, ‘অল্পসংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়ে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন।
চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেট নির্ভর রাজনীতি করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। এরই অংশ হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের বলয়ের নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে অগণতান্ত্রিক পন্থায় ও অন্যায্য সিদ্ধান্তের আলোকে বিএনপি-জামায়াত ও আগুন সন্ত্রাসীদের আতঙ্ক এমপি জাফর আলমকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনতা রাস্তায় নেমে এসেছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে এমপি জাফরকে অব্যাহতি দেয়ার খবর জানাজানি হলে রাত সাড়ে ৯টা থেকে চকরিয়া থানা রাস্তার মাথা ও সিস্টেম কমপ্লেক্সের সামনে মহাসড়কে টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেছে জাফর আলম এমপির সমর্থকরা। সড়কের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। নিকটস্থ দোকানসহ সব ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে সরে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে চকরিয়া পৌর শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বড় ধরনের সংঘাতের আশংকা দেখা দিয়েছে।
পাঠকের মতামত: