ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

একশ একর বনের জমি দখল করে প্লট বিক্রি করছে কুদরত মেম্বার : পাহারায় থাকে সশস্ত্র বাহিনি

মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার ::
কক্সবাজার শহরের ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মহুরী পাড়ার প্রায় একশ একর বন বিভাগের জমি দখলে রেখেছে স্থানীয় ইউপি মেম্বার কুদরত উল্লাহ।

কয়েক বছর আগে থেকে দখলে রাখা এই সরকারি সম্পত্তির মধ্যে ইতি মধ্যে অধিকাংশ প্লট করে বিক্রি করেছেন আরো প্রায় নতুন নতুন জায়গা দখল করছে। আর এসব সরকারি জমি দখলে রাখতে তিনি সেই বন বিভাগের জমিতে গড়ে তুলেছেন দ্বীতল বাড়ি,পাহারাদারের বাড়ি একই সাথে সেখানে থাকে স্বশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।

বাইরের কেউ গেলেই সেখানে পরিচয় দিয়ে ঢুকতে হয় আর কেউ ছবি তুলতে চাইলে লাতে অনুমতি না হয় নাজেহাল করে সেখানে পাহারায় থাকা সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়দের দাবী সরকারি দলের প্রভাবখাটিয়ে ইউপি মেম্বার ইতি মধ্যে প্রায় ২০ কোটিটাকার জমি বিক্রি করেছে দখলে রেখেছে আরো প্রায় ৩০ কোটি টাকার জমি।

সরজমিনে শহরের লিংকরোড় হয়ে সরকারি কলেজের পেছনে দক্ষিণ মহুরীপাড়া শামসুমিয়া ঘোনা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে বনের ভেতরে রয়েছে আরেকটি নিষিদ্ধ পল্লী সেখানে ঢুকতেই গেইটে পরিচয় দিয়ে ঢুকতে হয়। শুধু মাত্র সেখানা সার্বক্ষনিক পাহারায় থাকা কিছু যুবকদের অনুমতি ছাড়া কেই প্রবেশ করতে পারেনা সেখানে।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এই বিশাল এলাকার রামরাজত্ব চলছে ঝিলংজা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার কুদরত উল্লাহ। তিনি এসব কিছুর মালিক। কৌশলে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে ইতি মধ্যে অনেকে প্রতি গন্ডা ২ থেকে ৫ লাখ টাকায় কিনে সেখানে বাড়ি করেছে, বাড়ির সংখ্যাও প্রায় শতাধিক হবে। আর সেই এলাকার সব জমির মালিক কুদরত উল্লাহ।

জানা গেছে লিংকরোড় বিট অফিসের নিয়ন্ত্রনাধীন এসব জমির মালিক বন বিভাগ তবে দীর্ঘ বছর ধরে বিশাল এলাকার একছত্র মালিক বনে আছেন তিনি। উনার হুকুম ছাড়া সেখানে বন বিভাগের কোন কর্মীও আসতে পারেনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লিংকরোড় বিট অফিসের এক কর্মচারী বলেন আমি যোগদান করার পরে সেই জমিতে গিয়েছিলাম সে সময় ইউপি মেম্বার কুদরত উল্লাহ এবং ইনার ভাগ্নে আমাকে প্রচন্ডগালি গালাজ করেছিল পরে বিষয়টি আমি আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানালো তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি বরং আমাকে বারণ করেছে সেখানে না যেতে। তাই আমরা কেউ সেই জমিতে যায় না।তিনি নিজেও স্বীকার করেন প্রায় একশত একর বন বিভাগের জমি দখল করে রেখেছেন তিনি। তবে সেটা এখন নয় প্রায় ৮/১০ বছর ধরে সেই জমি দখল করেছেন তিনি।

শামসুমিয়ার ঘোনা এলাকার কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে এখানে সব সময় বেশ কয়েকজন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা পাহারায় থাকে। এছাড়া এই মহুরী পাড়ায় এলাকা কেউ জমি করলে বা বিক্রি করলে তাদের টাকা দিতে হয়। এমনকি ভাড়াটিয়ে আসলেও তাদের টাকা দিতে হয়। এছাড়া গত ৫/৬ বছর ধরে স্থানীয় ৪/৫ টি পাহাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করছে তারা এখন পাহাড় বলতে আর কিছুই নেই। আর বন বিভাগের সেই জমিতে দ্বিতল বাড়িতে প্রায় সময় গানবাজনা চলে আর প্রায় সময় অবৈধ কর্মকান্ড চলে কিন্তু প্রতিবাদ করার সাহস পায়না।

এ ব্যপারে ঝিলংজা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সরওয়ার আলম চৌধুরী বলেন,যে সব জমির কথা বলা হচ্ছে সে গুলো এক সময় মুফিজের দখলে ছিল পরে কুদরত উল্লাহরা দখল করেছে। এখানে এরকম অনেক সমস্যা আছে।

এ ব্যাপারে ঝিলংজা ইউপি মেম্বার কুদরত উল্লাহ বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। লেখালেখি করার দরকার নাই। এ ব্যপারে কক্সবাজার দক্ষিণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ন কবির জানান,এত বিপুল পরিমান বনের জমি দখলে রেখেছে সেটা আমার জানা নাই। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

পাঠকের মতামত: