ডেস্ক নিউজ :: রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় কক্সবাজার থেকে দেশে ফিরছে বলে মিয়ানমার দাবি করলেও এ বিষয়ে জানে না বাংলাদেশ। ঢাকায় মিয়ানমার দূতাবাস বৃহস্পতিবার এক ফেইসবুক পোস্টে ওই দাবি করার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের একথা বলেছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের কোনো ধারণা নেই। এটা তাদের তথ্য। তারা একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি, এমনকি তাদের সীমান্তের ভেতরে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকেও নেয়নি।” মিয়ানমারের ‘মিথ্যাচারের’ বিরুদ্ধে বুধবার বিবৃতি দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী উ কিয়াও তিন সাম্প্রতিক ন্যাম সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ‘ধর্মীয় নিপীড়ন’, ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ ও ‘গণহত্যার’ মতো শব্দ ব্যবহার করে রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টিকে বাংলাদেশ ‘ভিন্নভাবে’ চিত্রায়িত করছে।
তার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবারের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা কেন স্বেচ্ছায় ফিরতে আগ্রহী হচ্ছে না, তার সঠিক কারণগুলো সমাধানের জন্য মিয়ানমারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ‘মিথ্যাচার’ বন্ধ করে তাদের নিজেদের দায়িত্ব পালনে মনোযোগী হতে হবে।
বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সঙ্গে ও নিরাপদে তাদের ভিটেমাটিতে ফেরানোর ক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা থেকেই মিয়ানমার অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।
মিয়ানমার দূতাবাসের ওই ফেইসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, “৩১ অক্টোবর ২০১৯ আবারও বাস্তুচ্যুত ৪৬ জন ব্যক্তি নিজেদের ইচ্ছায় টং পিও লেতে ও না খু ইয়া কেন্দ্র দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফিরেছেন। সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অভিবাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের সবাইকে স্বাগত জানিয়েছেন।”
রোহিঙ্গা সঙ্কট: মিয়ানমারকে ‘মিথ্যাচার’ থামাতে বললো বাংলাদেশ
এখন পর্যন্ত ৩৯৭ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে ‘ফিরে গেছেন’ দাবি করে সেখানে বলা হয়, “তাদেরকে মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে চাল, খাবার তেল ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য দেওয়া হচ্ছে।
“বাংলাদেশের সঙ্গে সই করা দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আলোকে নিরাপদ, ঝামেলাহীন ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে মিয়ানমার সরকার তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এক্ষেত্রে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।”
বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে, যাদের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা এসেছে ২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইনে নতুন করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন শুরু হওয়ার পর। জাতিসংঘ ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল’ অভিযান হিসেবে বর্ণনা করে আসছে।
মিয়ানমার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হওয়ায় দুই দফা চেষ্টা করেও রোহিঙ্গাদের কাউকে রাখাইনে ফেরত পাঠানো যায়নি।
পাঠকের মতামত: