বিক্ষোভ শেষে দুপুরে কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয় ও প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারিরা। এছাড়াও বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা মুজিবুল আলমের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত কলেজের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ও সকল পরীক্ষায় অংশগ্রহন না করার ঘোষনা দেন।
সকালে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি নেতা মেরাজ আহমেদ মাহিন চৌধুরী, আবুল কাশেম, নুরুল আবছার মির্জাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। বিক্ষোভ চলাকালে কলেজ ক্যাম্পাসে বিপুল পরিমান আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এসময় বক্তারা বলেন, মুজিবুল আলম রামু কলেজকে অনিয়ম-দুর্নীতি ও সন্ত্রাসীদের আখড়ায় পরিনত করেছন। শিক্ষার্থীকে মারধর, মামলার হুমকী, ছাত্রলীগ ও পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে হয়রানি এবং কলেজ ফান্ডের কোটি টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে অধ্যক্ষের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলন প্রেক্ষিতে গত ১৯ আগস্ট পদত্যাগ করেন মুজিবুল আলম। কিন্তু সম্প্রতি মুজিবুল আলমের কলেজে যোগদান করাতে জনৈক রাজনৈতিক নেতার নেতৃত্বে বহিরাগতদের একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। বহিরাগত চক্রটি বৃহষ্পতিবার কলেজ ক্যাম্পাসে আতংক সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে জোরপূর্বক মুজিবুল আলমকে কলেজে ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা চালিয়েছে। যা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, গত বৃহষ্পতিবার কলেজ ছুটির পর বিকাল ৩টার দিকে সিএনজি গাড়িযোগে বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন পদত্যাগকারি অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম। এসময় মুজিবুল আলম কলেজে প্রবেশ করে শিক্ষকদের হুমকি-ধমকিও দেন। পরে তিনি অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে বহিরাগতদের সাথে ছবি তুলে স্বল্প সময়ের মধ্যে কলেজ ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। তবে যাওয়ার আগে তিনি শিক্ষকদের বলে যান- রবিবার থেকে তিনি নিয়মিত কলেজে এসে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে তীব্র আন্দোলনের মুখে রবিবার কলেজে যাননি মুজিবুল আলম।
রামু থানার ওসি ইমন কান্তি চৌধুরী জানিয়েছেন- শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।
ক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা বলেন, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এই অধ্যক্ষের অনিয়ম দুর্নীতির খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রনালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পৃথক তদন্ত কমিটিও হয়েছে। আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে এবং তদন্ত কমিটির লোকজনকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে নিজের অনিয়ম দুর্নীতি ধামাচাপা দিয়েছেন অধ্যক্ষ।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুপ্রতীম বড়ুয়া জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ মুজিবুল আলমের সই করা অব্যাহতি পত্রটি দাপ্তরিক নিয়ম মেনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছিলো। গত বুধবার তিনি ফের কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছেন।
অপরদিকে কলেজের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন- অধ্যক্ষ মুজিবুল আলমের বিরুদ্ধে কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মচারি লিখিতভাবে অনাস্থা দিয়েছেন। তাঁরা চান- কলেজে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসুক।
পাঠকের মতামত: