ফারুক আহমদ, উখিয়া ॥
উখিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষা অফিসের ব্যাপক বৈষম্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে জালিয়াপালং চাককাটা আবদুর রহমান বদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মারাত্মক বিঘœ সৃষ্টি হয়েছে। ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৪ জনই বিপিএড প্রশিক্ষণ গ্রহণে কক্সবাজার পিটিআই তে রয়েছে। ফলে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সচেতন মহলের প্রশ্ন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতার কারণে একই বিদ্যালয় থেকে ৫ শিক্ষকের মধ্যে কেবল প্রধান শিক্ষক ব্যথিত ৪ জন সহকারী শিক্ষক যোগদানের পর পরই বিপিএড প্রশিক্ষণে সুযোগ পায়। ফলে ৫ শতাধিক কচি-কচা শিক্ষার্থীর সুষ্ট লেখাপড়া নিশ্চিত্বের পরিবর্তে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে খোদ শিক্ষা অফিসার এমন অভিযোগ অভিভাবকদের।
জানা যায়, নবপ্রতিষ্ঠিত জালিয়াপালং দূর্ঘম এলাকায় গড়ে উঠা চাককাটা আবদুর রহমান বদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৫১৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রধান শিক্ষক এসএম লোকমান হাকিম জানান, ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকদের মধ্যে ফাতেমা বেগম, নাসরিন জাহান, পাপিয়া ছিদ্দিকী পারুল ও হাবিবুল করিম ফয়সাল বিদ্যালয়ে যোগদান করতে না করতেই কক্সবাজার পিটিআইতে বিপিএড প্রশিক্ষণের জন্য চলে যান। ২ বছর ব্যাপী এ প্রশিক্ষণে তারা অংশগ্রহণ করবে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও দাতা ফরিদ আহমদ বলেন, প্রান্তিক এলাকায় গড়ে উঠা এ বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৪ জন শিক্ষকই বিপিএড প্রশিক্ষণের জন্য চলে যাওয়া খুবই দু:খজনক। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস আদেশ ও প্রত্যয়ন নিয়ে কর্মরত সহকারী ৪ শিক্ষক যথাক্রমে ফাতেমা বেগম, নাসরিন জাহান, পাপিয়া ছিদ্দিকী পারুল ও হাবিবুল করিম ফয়সাল এ সুযোগটি পেয়েছে। কেবল প্রধান শিক্ষক থাকলেও দাপ্তরিক কাজ, মিটিংয়ে অংশগ্রহণ, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, বই সহ যাবতীয় প্রশাসনিক কার্যক্রমে তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে শিক্ষকের অভাবে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
অভিভাবকরা জানান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত ধরকে ম্যানেজ করে যোগদানকৃত ৪ জন সহকারী শিক্ষকই বিদ্যালয় থেকে বিপিএড প্রশিক্ষণে চলে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। সচেতন মহলের অভিমত বিপিএড প্রশিক্ষণে পাঠানোর পূর্বে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট হবে না কি না কিংবা পাঠ্যকার্যক্রমে বিঘœ সৃষ্টি হবে ইত্যাদি বিবেচনা করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়গুলো বিবেচনায় আনা উচিত ছিল। অভিযোগে প্রকাশ, মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে চাককাটা আবদুর রহমান বদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানকৃত ৪ জন শিক্ষককে বিপিএড প্রশিক্ষণে পাঠানোর সুযোগ করে দিয়েছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
দায়িত্বশীল সূত্রে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, জালিয়াপালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবদুর রহমান ও সোনাইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা খালেদা বেগম কে ডেপুটেশনে এ বিদ্যালয়ে প্রেরণ করেছে। অভিভাবকরা জানান, ২ জন শিক্ষক দিয়ে কিভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীদের পাঠ্যকার্যক্রম পরিচালনা করা খুবই কঠিন। কেবল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতায় আজ এ বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার করুণ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যালয়ের দাতা ফরিদ আহমদ সাংবাদিকদের জানান, শত শত শিক্ষার্থীর পাঠ্য কার্যক্রম সুষ্টুভাবে নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়েছে। ৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ নতুন কোন শিক্ষক নিয়োগ দেয়নি।
পাঠকের মতামত: