কক্সবাজার থেকে কফিল উদ্দিন আনু :::
উখিয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার প্রায় ৫ হাজার একর জমির উপর সৃজিত রাবার বাগান লুটপাট পুরোদমে চলছে। উখিয়া উপজেলার বালুখালী গ্রামের নুরুল হক কোম্পানীর মালিকানাধীন নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ফাত্রাঝিরি এলাকায় অবৈধ ভাবে গড়ে তোলা ইটভাটায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারী ও ব্যক্তি মালিকানাধীন রাবারবাগানের গাছ কেটে অবৈধ স’মিল ও ইটভাটায় সরবরাহ করে পোড়ানো হচ্ছে এসব রাবার প্লটের মূল্যবান গাছ। দীর্ঘদিন ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ফাত্রাঝিরি এলাকায় বনাঞ্চলের ভিতরে প্রায় ৫ একর জায়গায় পাহাড় ও বনভূমি নিধন করে গড়ে তুলেন অবৈধ ইট-ভাটা। রাবারবাগানের গাছ কেটে এসব ইটভাটায় সরবরাহ ও কাঠ পুড়িয়ে ইটভাটা চালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য অত্যন্ত ভয়ানক। সরকারী ভাবে সৃজিত ও ব্যক্তি মালিকানাধীন রাবার বাগানের গাছ কেটে প্রকাশ্যে ইটভাটায় সরবরাহ ও পোড়ানো হলেও প্রশাসনের কোন ধরনের মাথাব্যাথা না থাকলেও ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগানের মালিকেরা সর্বশান্ত হচ্ছে। তাদের অগোচরে এসব রাবার বাগানের মূল্যবান গাছ কেটে অবৈধ ইটভাটা ও সমিলে সরবরাহ দেওয়ার দৃশ্য ক্যামরাবন্দি করতে গিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকার দুই সংবাদকর্মীর ক্যামরা, মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারীরা। এদিকে ২৭১ তুমব্রু মৌজার ৩নং সিটের ১১২০নং প্লটের ২৫ একর ও ১৮নং প্লটের ২৫ একর জায়গা জুড়ে ব্যক্তিমালিকানায় গড়ে তোলা রাবার বাগানের মালিক আমিনুল হক চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, সংঘবদ্ধ পেশাদার কাঠচোর ও ইটভাটার মালিকের যোগসাজসে রাবার প্লট থেকে প্রায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের রাবার গাছ কেটে নিয়ে নুরুল হক কোম্পানীর এবি নামের ইটভাটায় সরবরাহ করে তা পুড়িয়ে ইট পাকানো হচ্ছে। এতে করে রাবার শিল্প এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও উত্তর ঘুমধুমের বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক সভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়ার মালিকানাধীন ৫০ একর রাবার বাগান থেকেও কয়েক কোটি টাকা মূল্যের রাবার গাছ কেটে নিয়ে অবৈধ ইটভাটা ও সমিলে সরবরাহ করছে। আর এসবের নেপথ্যে উখিয়া ফলিয়াপাড়া গ্রামের সশস্ত্র সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট কয়েক শতাধিক রোহিঙ্গা শ্রমিক দিয়ে ওইসব সরকারী ও ব্যক্তি মালিকানাধীন রাবার বাগানের গাছ কাটা পুরোদমে অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া স্থানীয় ঘুমধুম এলাকার জকরিয়া ফকির, মেহের আলী, মকলেছুর রহমান, সামশুল হক ফকির এর নেতৃত্বে বিভিন্ন সরকারী বাগানের গাছ কেটে নুরুল হক কোম্পানীর উক্ত এবি নামের ইটভাটায় সরবরাহ করছে বলে জানা গেছে।
এছাড়াও উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ইটভাটায় ব্যাপক হারে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। ফসলী জমির মাটি কেটে ইটভাটায় সরবরাহ করার কারণে শতাধিক একর আবাদি জমির চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ইটভাটার কালো ধুঁয়া ও ধুলোবালির কারণে এলাকার বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এমনকি বসবাসরত লোকজন নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যাতায়াতের রাস্তা কেটে ইট ভর্তি ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কের বেহাল দশা ও বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে করে দিনের পর দিন এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে প্রভাবশালী জেলার এক আওয়ামীলীগ নেতার মালিকানাধীন ইটভাটা, পাগলিরবিলের ছৈয়দ উল্লার মালিকানাধীন ইটভাটা, চট্টগ্রাম রাউজানের পলাশ বড়–য়ার মালিকানাধীন ইটভাটা সহ অন্যান্য ইটভাটায় গাছ পোড়ানোয় উপজেলার সরকারী বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সহজ সরল লোকজনের কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে নিয়ে ইট ভাটায় তৈরী কাজে ব্যবহার করছে। ফলে হাজার হাজার ফসলী জমি অনাবাদি জমিতে পরিণত হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসনের অনুমোদন নিয়ে জনবসতি এলাকার বাইরে সরকারী নিয়মনীতি অনুসরণ করে এবং নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কয়লা পুড়িয়ে ইটভাটায় ইট তৈরী করতে হয়। সরেজমিনে নুরুল হক কোম্পানীর অবৈধ ইটভাটায় গিয়ে দেখা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ি থেকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দুরে বৃহত্তর রেজু ফাত্রাঝিরি ৮নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত বনায়ন ও পাহাড় কেটে প্রায় ৫ একর জায়গাজুড়ে এবি নামের অবৈধ ইটভাটায় শত শত ট্রাক ও ডাম্পারযোগে গাছ সরবরাহ করছে কাঠ পাচারকারী বেলাল সিন্ডিকেট। এ চিত্র ক্যামরাবন্দি করতে গেলে উক্ত সিন্ডিকেট স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকের দুই সংবাদকর্মীর ক্যামরা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সর্দার শরিফুল ইসলাম বলেন, শুধু এবি ইটভাটা নয়, ঘুমধুমে কোন কাগজপত্র ছাড়াই অবৈধ উপায়ে গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাফায়েত মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম জানান, ইটভাটার বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের তদবিরে ও প্রভাবের কারণে তিনি কিছুই করতে পারছেন না। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, কোন ইটভাটার বৈধ কোন কাগজ পত্র নেই। অবৈধ এসব ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর ফলে একদিকে সামাজিক বনায়ন সহ রাবারবাগান সাবাড় অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী সম্মেলন উখিয়ায় তৃণমূলে চাঙ্গা বিএনপি
গফুর মিয়া চৌধুরী, উখিয়া :::
উখিয়া উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সম্মেলনের দিনক্ষন ঠিক করা হয়েছে বলে বিএনপির দলীয় সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের এ খবর জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি ঘরনার মধ্যে নানা কথাবার্তা, আলাপ-আলোচনা দেখা দিয়েছে। উপজেলা বিএনপির সম্মেলন নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মী মধ্যেও চাঙ্গাভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।
বিএনপির সম্মেলনকে সামনে রেখে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারী উখিয়া উপজেলা বিএনপি সাব-জেট কমিটির মিটিং আহবান করেছে বলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি কাজী রফিক উদ্দিন সকালের কক্সবাজারকে জানিয়েছেন। এবারের উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে নতুন পুরাতনের সমন্বয়ে কমিটিতে কে আসছেন তা এখনো পরিস্কার নয়। অবশ্যই বিএনপির জৈষ্ঠ্য নেতারা মনে করেন জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী একজন বষীয়ান রাজনীতিবিদ হিসেবে সম্মেলনে এবারও নতুন পুরাতন মূখ নিয়ে সভাপতি-সম্পাদক করে কমিটি উপহার দিতে ভূল করবেন না। কারণ রাজনীতিতে অভিজ্ঞ ও ত্যাগীদের স্থান না থাকলে দলে না সংকট তৈরি হয়। বিএনপির দুঃসময়ের অনেক কান্ডারী আগামী ২৭ফেব্রুয়ারীর সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ত্যাগী নেতারা এ কমিটিতে স্থান পেয়ে মূল্যায়িত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ্ব জালাল আহমদ চৌধুরী। তিনি আরো বলেন, উখিয়া-টেকনাফে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতাকর্মীরা সাবেক সাংসদ ও জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর নেতৃত্বে অতীতেও ঐক্যবদ্ধ ছিল এবং বর্তমানেও অবিচল রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি কাজী রফিক উদ্দিন বলেছেন, আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী উখিয়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে কোন ধরনের গ্রুপিং, লবিং, কাঁদা ছুড়াছুড়ি হবে না। কারণ উখিয়া-টেকনাফে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সর্বস্থরের নেতাকর্মীরা পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ও সাদা মনের মানুষ হিসেবে উখিয়া-টেকনাফের বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য জেলা বিএনপির সফল সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীকে মনে প্রাণে ভালবাসে বিধায় তার যোগ্য নেতৃত্বের প্রতি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, ২৭ ফেব্রুয়ারী উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অবশ্যই ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে উখিয়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে দলের নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিএনপি প্রত্যেক ইউনিয়নের সম্মেলন সম্পন্ন করা হয়েছে এবং যথা সময়ে সম্মেলন হবে।
######################
কক্সবাজার শহরে আনিকা ষ্টোরে নগদ টাকাসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরি
কক্সবাজার থেকে কফিল উদ্দিন আনু :::
কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া প্রধান সড়কে জাহাঙ্গীর আলমের মালিকানাধীন আনিকা ষ্টোরে দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়েছে। এ সময় চোরের দল নগদ টাকা ও অন্যান্য মালামালসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে। গতকাল ১০ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাত ৩টার দিকে দোকানের গ্রীলের তালা ভেঙ্গে চোরের দল এ ঘটনা ঘটায়।
স্থানীয়রা জানায়, টেকপাড়া প্রধান সড়কের আনিকা ষ্টোরের গ্রীলের ৪টি তালা ভেঙ্গে নগদ টাকা সহ দোকানে থাকা প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে গেছে চোরের দল। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে দোকানের মালিক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে কক্সবাজার মডেল থানায় অভিযোগ দায়েরা করেছে বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের মতে, পার্শ্ববর্তী কিছু বখাটে চিহ্নিত যুবক উক্ত দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে। তবে এ ব্যাপারে চুরির সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা না হলে ভবিষ্যতে শহরে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে পারে।
পাঠকের মতামত: