ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

উখিয়ায় ডেঙ্গু ঝুঁকিতে রোহিঙ্গারা, ৩ রোগী সনাক্ত

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া ::

উখিয়ায় সনাক্ত করা হয়েছে ৩ জন ডেঙ্গু রোগী। যে কারনে ডেঙ্গু ঝুঁকিতে ক্যাম্পে আশ্রিত রোগীরা । এ রোগ সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা না থাকায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি। বিশেষ করে রোহিঙ্গা শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই আগাম প্রস্তুতি গ্রহন করা দরকার বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তবে ডাক্তারেরা বলছেন আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই সাধারণত রোহিঙ্গাদের এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কম। এরপরও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।

সরজমিন উখিয়ার কুতুপালং, লম্বাশিয়া, মধুরছড়া এবং ১৭ নং ক্যাম্প এলাকা ঘুরে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সারাদেশে যেভাবে ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পড়েছে এতে রোহিঙ্গারা আতংকিত ও শঙ্কিত। যেহেতু ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে তাদের কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। এ জন্যে তারা এই রোগ মোকাবেলা এবং প্রতিরোধে বিভিন্ন এনজিও, সরকারী,বেসরকারী সংস্থার নিকট সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।

এসময় ১৭ ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা আবদুর রহমান (৪৫)বলেন, ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে তারা একেবারে অপরিচিত। আর এই রোগের চিকিৎসাও নাকি ব্যয়বহুল, তাই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই রোগ সৃষ্টি হলে মৃত্যু ছাড়া আর

কোন উপায় নেই। বিশেষ করে ঝুঁকিতে আছে শিশুরা। কারণ রোহিঙ্গা শিশুরা সারাদিন ক্যাম্পের দিকবেদিক ছুড়াছুঁড়ি করতে থাকে আর পাহাড়ে নিচে গর্তে জমাট বাধা পানিতে লাফালাফি করতে থাকে, যেখানে ডেঙ্গু মশা সৃষ্টি হওয়ার আশংকা রয়েছে।

কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মাহামুদুর রহমান (৩৬) বলেন, রোহিঙ্গাদের মাঝে ডেঙ্গু সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার কারনে ঝুঁকিতে রয়েছে রোহিঙ্গারা। সে আরো আশংকা করে বলেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গাড়ী ও অন্যান্য মালামাল ক্যাম্পে আসছে প্রতিনিয়ত, এর ভেতরে করে ডেঙ্গু মশাও আসতে পারে, যেটি অসম্ভব কিছু নয়।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত এমএসএস এর গণসংযোগ কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এখনো পর্যন্ত কোন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়নি, তবে জ্বর,সর্দি,কাশি নিয়ে প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে। এদের মধ্যে যাদের অবস্থা বেগতিক তাদেরকে উখিয়া হসপিটালে রেফার দেয়া হচ্ছে।

উখিয়া স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মেহেরাজ হোসেন চয়ন বলেন, সোমবার  উখিয়ায় এ পর্যন্ত ৩ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। এরা হলেন-হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের জনাবআলী পাড়ার মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন(৩০), রাজাপালং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মধ্যম রাজাপালং ভাড়া থাকা এনজিওকর্মী মমতাজ বেগম(২৪),সহ ৩জন। এদের মধ্যে ২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আরেকজনকে কক্সবাজার রেফার করে দেওয়া হয়েছে। এখনো রোহিঙ্গাদের মাঝে এই রোগ পাওয়া যায়নি।

তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গারা যে ঝুঁকিতে নেই, সেটি বলা যাবেনা, কারন ক্যাম্পে পাহাড়ের নিচে গর্তে জমাট বাধা পানিতেও এডিস মশার জন্ম হতে পারে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তারা ভাল আছে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার থেকে উদ্বাস্তু হয়ে উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এদের মধ্যে অধিকাংশ শিশু। আর এসব শিশুরা অতি ডেঙ্গু ঝুঁকিতে।

পাঠকের মতামত: