ভারতের বিরুদ্ধে ম্রিয়মান পারফরম্যান্সকে মাটি চাপা দিয়ে জয়ের ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশ দল। আইসিসি সহযোগী সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে অনায়সেই জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শুক্রবার আরব আমিরাতকে ৫১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। টুর্নামেন্টে টানা দুই ম্যাচ হারল বাছাই পর্ব উতরে আসা আমিরাত। আর বাংলাদেশের এটি প্রথম জয়।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৩৩ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ১৭.৪ ওভারে ৮২ রানে অলআউট হয় আরব আমিরাত। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ম্যাচ সেরা হন।
পুঁজিটা বড় ছিল না। সেটিকে অবশ্য হুমকির মুখে পড়তে দেননি বাংলাদেশের পেসাররা। মাশরাফি-মুস্তাফিজদের বোলিং তোপে চোখে সর্ষে ফুল দেখার যোগাড় হয় আইসিসি সহযোগী দেশটির ব্যাটসম্যানদের। আমিরাতের উইকেট পতনের ধারা অব্যাহত থাকায় জয় পেতে সময় লাগেনি বাংলাদেশের। দুঅংকের ঘর স্পর্শ করেছেন তিন জন। মোহাম্মদ উসমান ইনিংস সর্বোচ্চ ৩০, রোহান মোস্তফা ১৮, শেহজাদ ১২ রান করেন।
শুরুটা করেছিলেন আল-আমিন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই তার শিকার কালিম (০)। রোহান মোস্তফা, শেহজাদের ২৩ রানের জুটি ভাঙতে পারতো ৪র্থ ওভারে। ফলো থ্রুতে অসাধারণ ক্যাচ নিলেও তা তালুবন্দী রাখতে পারেননি মুস্তাফিজ। মাশরাফির করা পরের ওভারেই রোহান মুস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দেন। মাশরাফির দ্বিতীয় শিকার হন শায়মন আনোয়ার (১)। অষ্টম ওভারে মুস্তাফিজের স্লোয়ার-কাটারে নাকাল হয়ে পরপর দুই বলে শেহজাদ ও সন্দীপ পাতিল ফিরেন। মুস্তাফিজের হ্যাটট্রিকটা না হলেও আমিরাতের ব্যাটিং মেরুদন্ড ততক্ষণে ভেঙে গেছে।
পেসারদের পর স্পিনাররা জ্বলে উঠেন বল হাতে। মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব মিলে আমিরাতের ইনিংসের লেজটা মুড়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষে মাশরাফি, মুস্তাফিজ, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব ২টি করে উইকেট পান। আল-আমিন, তাসকিনও ১টি করে উইকেট পেয়েছেন।
এর আগে অতীতের মতোই টি-২০’র সুর ধরতে গিয়ে স্বাভাবিক ব্যাটিংই হারিয়ে বসেছিল টাইগাররা। ভারতের মতোই অপেক্ষাকৃত দুর্বল আমিরাতের বিপক্ষেও হতশ্রী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী করেছিল বাংলাদেশ। প্রত্যাশিত শুরু পেলেও তেজস্বী ব্যাটিংয়ের ছায়া দেখা যায় নি। বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানই উইকেট বিলিয়ে ফিরেছিলেন। তারপরও সম্ভাবনা ছিল দেড়শোর ছাড়িয়ে যাওয়ার। সেটি হয়নি ইনিংসের মাঝপথে কম সময়ের ব্যবধানে (১১ রানে ৩ উইকেট) সাব্বির, মিঠুন ও মুশফিকের বিদায়ে।
৪৬ রানের ওপেনিং জুটি বিচ্ছিন্ন হয় ষষ্ঠ ওভারে সৌম্য মিড অনে সহজ ক্যাচ দিলে। তিনি ১৪ বলে ২১ রান করেন। জড়তা কাটিয়ে এদিন মিঠুন স্বাবলীল ব্যাটিং করেছেন। হাফ সেঞ্চুরিও খুব দূরে ছিল না। কিন্তু সামান্য আনাড়িপনায় রান আউট হন তিনি। ৪১ বলে ৪৭ রান (৪ চার, ২ ছয়) করেন তিনি। সাব্বির ৬, মুশফিক ৪ রান করে ফিরেন।
সাকিব-মাহমুদউল্লাহর ৫ম উইকেট জুটি ২৯ রানেই থেমে যায়। আমজাদ জাভেদের করা ১৮তম ওভারে পরপর দুই বলে সাকিব (১৩), নুরুল হাসানের (০) বিদায়ে আবারও হোঁচট খায় বাংলাদেশ। পরের ওভারে মাশরাফিও (০) লং অফে ক্যাচ দেন। তবে শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহর সাহসী ব্যাটিং লড়াকু পুঁজি এনে দেয় দলকে। ওই ওভারে আসে ১৭ রান। মাহমুদউল্লাহ ২৭ বলে ৩৬ রানের (১ চার, ২ ছয়) মূল্যবান ইনিংস খেলেন। তাসকিন (১) রান আউট হন। আমিরাতের পক্ষে নাভিদ-জাভেদ ২টি করে উইকেট নেন।
পাঠকের মতামত: