ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

অনিয়ম যেন শেষ হচ্ছে না মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্রে জমি অধিগ্রহণ

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুত কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণের টাকা নিয়ে অনিয়ম যেন শেষ হচ্ছে না। ২৩ কোটি লোপাটের হোতারা জেলে পর্যন্ত গেছে। তারপরও থামেনি দুর্নীতি। মোট টাকার অঙ্কে শতকরা হিসাব যেন আগেই আদায় চাই, এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে। সমানতালে নানাভাবে অনিয়ম-দুর্নীতি করে যাচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণে সংশ্লিষ্ট লোকজন। এমন অভিযোগ অসংখ্য ভুক্তভোগীর। মোহাম্মদ মীর কাসেম নামে এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, মাতারবাড়ি ১২ একরের কয়লাবিদ্যুত কেন্দ্রে তার ও তার পরিবারের লোকজনের ১২একর ৪০শতক জমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়েছে। শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশ থাকলেও জেলা প্রশাসনের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজশে একটি অসাধু চক্রের প্রায় ২৩ কোটি টাকার লুটপাটকে কেন্দ্র করে অনেক জমির মালিকের জমির ন্যায্য মূল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। ২৩ কোটি টাকা লুটপাটের দুর্নীতিবাজরা আরও বেপরোয়া হয়ে চরম দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। এর চরম ভুক্তভোগী হয়ে আমিও জমির ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছি। শুধু আমি নয়- অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ জমির ন্যায্য মূল্য পায়নি।

তিনি বলেন, ন্যায্য মূল্য চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে কোন প্রতিকার না পেয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্তরা বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আশ্রয় নিই। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চারবার দেখা করেছি। প্রথমবারেই তিনি বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে তা সমাধানের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশের পর তৎকালীন জেলা প্রশাসক আমাকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করবেন বলে জানান। কয়েকদিন জেলা প্রশাসক বিষয়টি নিয়ে নড়াচড়া করলেও পরে আর কোন কথা শোনেন না। শেষ পর্যন্ত সমাধানও করেনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের সমাধান না পেয়ে আবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করি। আবারও তিনি জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। ওইবারও প্রথমে গুরুত্ব দিয়ে পরে পাত্তাই দেয়া হয়নি আমাদের জমির ন্যায্য মূল্য পাবার বিষয়টি। এভাবে চারবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দেয়ার পরও কোন সমাধান পাওয়া যায়নি।

বর্তমানে অধিগ্রহণকৃত বৈধ জমি দিয়ে দুর্ভিক্ষপীড়িত অবস্থায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিনযাপন করছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করায় জেলা প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা ও অসাধু চক্র আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। ওই দুর্নীতিবাজ চক্র নানাভাবে আমাকে হয়রানি ও হুমকি দিচ্ছে।

এর অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তারা অভিযোগকারী সদস্যদের চিরতরে ধ্বংস করার জন্য জমির অধিগ্রহণের টাকা ভিত্তিহীন ও অবৈধ লোকজনের হাতে তুলে দিয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, এ ধরনের কোন অভিযোগ আমার জানা নেই। তবে কেউ অভিযোগ নিয়ে এলে তদন্ত করে অবশ্যই দোষী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

পাঠকের মতামত: