ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

৪ মাস ধরে বন্ধ পর্যটন সেক্টর, খুলে দেয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  করোনা সংকটে দীর্ঘ ৪ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে পর্যটন সেক্টর। এতে এই শিল্পের সাথে জড়িত কর্মকর্তা কর্মচারিরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাই ঈদুল আযহার আগে পর্যটন স্পটসহ হোটেল মোটেল গেষ্ট হাউস খুলে দেয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেষ্ট হাউস অফিসার্স এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ। রবিবার (১৯ জুলাই) সকালে সংগঠনের সভাপতি সুবীর চৌধুরী বাদল ও সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিমের নেতৃত্বে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আফসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এই স্মারকলিপি দেয়া হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, পর্যটন শিল্প দেশের উন্নয়ন ব্যাপক সহযোগিতা করে আসছে। জিডিপিতে পর্যটন শিল্পে বিশেষ অবদান রয়েছে। দেশ রক্ষায় আপনার নির্দেশে করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে ২৭ মার্চ থেকে সারা দেশে লক ডাউন শুরু করা হয়। দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে ২০ মার্চ থেকে পর্যটন শিল্প বন্ধ করে দেয়া হয়। তাই দেশে করোনার আক্রান্তের জন্য পর্যটন শিল্প কোন ভাবে দায়ী নয়। আজ ৪ মাস হতে চলেছে পর্যটন সেক্টর বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, আপনার কথামত আমাদের করোনার মধ্যে বসবাস করতে হবে। আবার অর্থনীতির গতিও সচল রাখতে হবে। ইতোমধ্যে আপনার নির্দেশে ব্যাংক, বীমা, অফিস-আদালত, গণ পরিবহনসহ সব কিছু স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে খুলে দেয়া হয়েছে। তাই আমাদের দাবী কক্সবাজার পর্যটন সেক্টরও খুলে দেওয়া হউক। কারণ পর্যটন শিল্প বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে ৩০ হাজার হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ লক্ষাধিক মানুষ। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার ফলে এসব পরিবারে অভাব-অনটন দেখা দিয়েছে। দক্ষ ও যোগ্য পর্যটন কর্মীরা পেশা পরিবর্তন করে অন্যদিকে চলে যাচ্ছে। ফলে পর্যটন শিল্পে দক্ষ ও যোগ্য কর্মীর অভাব দেখা দিবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কর্মীরা এখন সম্পূর্ণ কর্মহীন রয়েছে। দীর্ঘ দিন হোটেল বন্ধ থাকার ফলে হোটেলে আসবাবপত্র এসিসহ মুল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া রেস্তোঁরার কর্মচারী, ঝিনুক ওয়ালা, বীচ হকার, জীপ গাড়ির ড্রাইভার ও হেলপার, কিটকট কর্মচারী, শুটকী বিক্রেতা, বার্মিজ শিল্পের সাথে জড়িত লক্ষাধিক মানুষ বেকার রয়েছে। তাই আমরা মনে করি সব কিছু খুলে দিয়ে শুধু মাত্র কক্সবাজার পর্যটন সেক্টর বন্ধ রাখা অনুচিত।

স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের হোটেল গুলো খুলে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া হোটেল রেস্তোঁরা খুলে দেওয়া নিয়ে আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৫টি বিধি মেনে হোটেল খুলে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। আমরা উক্ত বিধি মেনে চলতে বদ্ধ পরিকর। ইতোমধ্যে দেশের লক্ষাধিক মানুষ করোনা জয় করে সুস্থ হয়েছে। তাদের মানসিক প্রফুল্লতার জন্য তারা কক্সবাজার আসতে চাই। অনেকে ঘরে ৪ মাস ধরে ঘরে বদ্ধ অবস্থায় থাকতে থাকতে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে। তারাও মানসিক সুস্থতার জন্য কক্সবাজারে আসতে চাই। তাছাড়া কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লবণাক্ত হাওয়া করোনা প্রতিরোধে কার্যকর ভুমিকা রাখে। তাই আমাদের দাবী কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ও হোটেল-মোটেল গেষ্ট হাউস সমূহ খুলে দেয়া হউক। পাশাপাশি হোটেল কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-বোনাস প্রদান, কর্মচারীদের কাজে বহাল ও চাকুরীর নিশ্চয়তা দিতে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেষ্ট হাউস অফিসার্স এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম টিপু, অ্যাড. রেজাউল করিম রেজা, সদস্য সুরঞ্জিত গুহ শিমুল, শওকত ওসমান, রিদওয়ান সাঈদী, আউলাদ হোসেন কেনেডি, সুথেদু বড়–য়া, আবদুর রহমান, মঈন উদ্দিন, খাইরুল আমিন, শাহজাহান মনির, আনোয়ার সিকদার, হানিফ হেলালী, মিজানুর রহমান, মো. জিসান, মো. হায়দার আলী ও মো. শহীদুল্লাহ।

পাঠকের মতামত: