কক্সবাজার প্রতিনিধি :: টানা এক মাস পর অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টির দেখা পেল কক্সবাজারবাসী। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সোয়া ২টার দিকে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে কক্সবাজার শহর ও আশেপাশে ঘণ্টাব্যাপী হালকা বৃষ্টিপাত হলেও উখিয়া, চকরিয়া ও পেকুয়ায় আগের দিন রাতেও বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ বৃষ্টিপাতের কারণে বঙ্গোপসাগর উপকূলের রেড টাইড বা ‘লাল জোয়ার’ এর প্রভাব কিছুটা কমবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস মঙ্গলবার ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। শহর ও আশেপাশের আকাশ দুপুরের পর থেকেই মেঘলা রয়েছে। বৃষ্টিপাতের কারণে দিনের তাপমাত্রা কমেছে এবং বৈশাখী খরতাপে নাভিশ্বাস ওঠা জনমনে স্বস্তি ফিরেছে। গত একসপ্তাহ ধরেই কক্সবাজারে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রির ওপরে উঠানামা করছিল।
কক্সবাজার আবহাওয়া বিভাগের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান, মঙ্গলবারের হালকা বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে গত ৬ মাসে দ্বিতীয় বারের মতো বৃষ্টির দেখা পেয়েছে কঙবাজারবাসী। এর আগে টানা ৫ মাস পর গত ৪ এপ্রিল রাতে ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। গত বছর সর্বশেষ বৃষ্টিপাত হয়েছিল নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ। এদিন মাত্র ১০ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল কঙবাজারে। গত বছর নভেম্বর মাসে মোট ৩০ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। এরমধ্যে ১ নভেম্বর ১২ মিলিলিটার ও ২ নভেম্বর ৮ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়।
তবে এ বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার সদর, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও টেকনাফ উপজেলার লবণ মাঠে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানান কঙবাজারস্থ বিসিক লবণ কেন্দ্রের পরিদর্শক ইদ্রিস আলী। তবে বৃষ্টির কারণে দু-একদিনের লবণ উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান ড. শফিকুর রহমান এ বৃষ্টিপাতের কারণে বঙ্গোপসাগর উপকূলের লাল জোয়ারের প্রভাব কিছুটা কমবে বলে মনে করেন। অন্যদিকে এই বৃষ্টিপাতের ফলে কঙবাজারের ভূ-গর্ভস্থ পানীয় জলের মজুদের উপর কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন বিশিষ্ট ভূ-তত্ত্ববিদ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকী। তার মতে, শহরের একাংশে প্রতি বছর খরা মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানীয় জলের সাথে জনস্বাস্থ্যের জন্য সহনীয় মাত্রার অতিরিক্ত লবণাক্ত পানি ও ইউরেনিয়াম-থোরিয়ামের মতো ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়। আর বৃষ্টিপাত হলে মজুদগুলো পুনরায় রিফিল হয়ে পানিতে ক্ষতিকর পদার্থের মাত্রা কমে আসে। মঙ্গলবারের বৃষ্টিপাত হালকা হলেও ভূ-গর্ভস্থ পানি দ্রুত নিচে নেমে যাওয়ার হার কিছুটা রোধ করবে।
পাঠকের মতামত: