নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ::
সাহসিকতা ও কর্মদক্ষতায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন, কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার, টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সহ কক্সবাজার জেলা পুলিশের পাঁচ চৌকষ পুলিশ কর্মকর্তা আজ সোমবার ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকাস্থ রাজারবাগ পুলিশ সদর দপ্তরে পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পদক বিপিএম (বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল) এবং পিপিএম (প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল) পুরস্কার পাচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০১৯’ উপলক্ষ্যে ঢাকাস্থ রাজারবাগ পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুরস্কার নেয়ার জন্য বর্তমানে ঢাকায় অবস্থানরত কক্সবাজারেরপুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ শাখা-২ থেকে গত ২৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার উপসচিব ফারজানা জেসমিনের স্বাক্ষরে ১৯/৬৮/১(১১) নাম্বার স্মারকে জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজার জেলা পুলিশের ৫ জন মেধাবী ও চৌকষ পুলিশ কর্মকর্তা সহ সারাদেশে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ৩৪৯ জনকে বিপিএম ও পিপিএম পুরস্কারের জন্য চুড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়। যা ইতোমধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
ওই গেজেটে পুরস্কারের জন্য চুড়ান্তভাবে মনোনীত কক্সবাজার জেলা পুলিশের ৫ কর্মকর্তা হলেন-কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন (বিপি:৭৫০৫১০৫০৭৯) বিপিএম (সাহসিকতা), টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ (৭২৯৫০৮৪৪২) বিপিএম (সাহসিকতা), কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার (বিপি:৬৮৯৮০৫৩৫৪৮) পিপিএম (সাহসিকতা) টেকনাফ মডেল থানার সাব ইনস্পেক্টর (এসআই) (নিরস্ত্র) শরিফুল ইসলাম (বিপি:৮৪০৩০৬৪৩৫৭) পিপিএম (সাহসিকতা) এবং একই থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) (নিরস্ত্র) রাসেল আহামদ (৮৪১৩১৫৭৮১২) পিপিএম (সাহসিকতা)। পুরস্কার প্রাপ্ত জেলা পুলিশের ৫ কর্মকর্তাই পুরস্কার গ্রহনের জন্য বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন।
এছাড়া, র্যাব-৭ এর অধীন কক্সবাজার জেলায় কর্মরত কক্সবাজার সদর উপজেলার কোম্পানি অধিনায়ক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর মেহেদী হাসান এবং টেকনাফে কর্মরত বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট শাহেদ মাহতাবও পুলিশের একই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। পুরস্কার প্রাপ্তরা রাষ্ট্রীয় অর্থ সুবিধা এবং প্রাপ্ত উপাধি নিজ নিজ নামের শেষে ব্যবহার করতে পারবেন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন এই দুর্লভ পুরস্কারের জন্য তিনি সহ কক্সবাজার জেলা পুলিশের পাঁচ জন কর্মকর্তাকে চুড়ান্তভাবে মনোনীত করায় তাঁর প্রতিক্রিয়ায় মহান আল্লাহতায়লার কাছে শোকরিয়া জ্ঞাপন করে বলেন-এ বিরল পুরস্কারের জন্য তাঁদের নির্বাচিত করায় তাঁদের ত্যাগ, সাহস ও ঝুঁকিপূর্ণ কর্মের যথার্থ মূল্যায়ন করা হয়েছে। এতে তাঁদের কাজের গতি, সাহস ও উৎসাহ আরো বাড়বে বলে এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন-রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্তির এই অর্জন শুধুমাত্র তাঁর একার কৃতিত্ব নয়, তাঁর মতে-এই কৃতিত্ব কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল সদস্যের। কারণ জেলা পুলিশের সকল সদস্য ও কক্সবাজারের নাগরিকরা আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষায় সহযোগিতা না করলে এ বিরল অর্জন কখনো সম্ভব হতনা।
এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন আরো বলেন-এ বিশাল প্রাপ্তি তাঁর ও তাঁর বাহিনীর দায়িত্বের পরিধিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে এবং দেশের কাছে ঋনী করেছে। পুলিশ ও জেলাবাসীর মর্যাদাকে বৃদ্ধি করেছে।
তিনি বলেন-জাতীয় পদক পাওয়া জেলা পুলিশের অবশিষ্ট ৪ জন কর্মকর্তাও খুবই যোগ্য, দক্ষ এবং মেধাবী। তিনি পুরস্কার প্রাপ্তির এই শুভলগ্নে কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল কর্মকর্তা ও সদস্য এবং কক্সবাজারের সকল নাগরিককে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এই অপরিসীম অর্জনে কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল সদস্য অধম্য আত্মবিশ্বাস, প্রেরণা ও প্রত্যয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন তাঁকে সহ জেলায় ৫ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রদত্ত এই গৌরবময় সম্মাননা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক (বিপিএম-পিপিএম), পুলিশ সদর দপ্তরের সকল উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তাঁর কর্মজীবনের আরো সাফল্যের জন্য এ.বি.এম মাসুদ হোসেন সবার কাছে দোয়া ও সহযোগিতা চেয়েছেন।
পাঠকের মতামত: