সাগরে এখনো ভাসছে কক্সবাজারের ৭৪ জেলে। তাঁদের সবাই চলতি বছরের ৬ নভেম্বর ঘুর্ণিঝড় নাডায় নিখোঁজ এফবি সাজ্জাদ, এফবি রেশমি এবং এফবি জায়েদ’র মাঝি-মাল্লা। ইতোমধ্যে তাঁরা মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছেন। অনেকে খাদ্য ও সুপেয় পানি সংকটে পড়ে হয়েছেন নানা রোগে আক্রান্ত। গত ২৭ নভেম্বর ফিরে আসা ট্রলার এফবি আল্লাহ্র দান’র মাঝি-মাল্লাদের বরাত দিয়ে এমন কথাই বললো নিখোঁজ জেলেদের পরিবার।
তাঁদের দাবি, ভাসমান জেলেদের উদ্ধারে সরকারি পর্যায় থেকে নেয়া হচ্ছে না কোন কার্যকর পদক্ষেপ। এমনকি ট্রলার মালিকরাও এখন তাঁদের এড়িয়ে চলছেন। সহযোগিতা চেয়ে বারবার ধর্ণা দিলেও তাতে সাড়া দিচ্ছেন না। কোন ধরনের সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে নিখোঁজদের পরিবারে বেড়ে গেছে আহাজারি। সাগরে ভাসমান পরিবারের সদস্যদের ফিরিয়ে আনতে আজ ৩০ নভেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিবেন বলেও জানালেন তাঁরা ।
নিখোঁজ জেলে ওসমান সরওয়ার প্রকাশ মেন্টুর পিতা ছালেহ আহমদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,“ আমার ছেলে ‘এফবি সাজ্জাদ’ এ করে সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিল। ঘুর্ণিঝড় নাডা’র পর থেকে সে নিখোঁজ। ইতোমধ্যে তার সাগরে ভেসে থাকার সংবাদ শুনি। এরপরই ট্রলার মালিক কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাকে বলি, সরকারি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজেরা গিয়ে হলেও নিখোঁজদের উদ্ধার করে আনবো। কিন্তু সে আমাদের কোন কথাতেই কান দিচ্ছে না।”
নিখোঁজ আরেক জেলে আতিকুর রহামানের পিতা ছালেহ আহমদ বলেন,“ দু’দিন আগে ফেরত আসা জেলেদের কাছে শুনেছি আমার সন্তান জীবিত আছে। তাদের ট্রলারের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে ফেরত আসতে পারছে না। মাঝে মাঝে সাগরে চলাচলরত বড় বড় জাহাজগুলোকে সিগন্যাল দিয়ে সহায়তার অনুরোধ করে। কিন্তু জলদস্যু ভেবে তাদের সহায়তা করা হচ্ছে না। ভাগ্যক্রমে হটাৎ ইঞ্জিন চালু হওয়ায় একটি ট্রলার ফেরত এসেছে। সরকারি সহায়তা পেলে আমরাও আমাদের সন্তানদের জীবিত ফেরত পাবো।”
শীঘ্রই জলসীমায় আটকে থাকা মরণাপন্ন জেলেদের উদ্ধারে সরকারি সাহায্যের দাবি জানায় নিখোঁজ জেলেদের পরিবার। প্রয়োজনে এ জন্য অনশনের মতো কঠিন কাজ করতেও তাঁরা পিছপা হবেন না বলেও জানান।
##
পাঠকের মতামত: