নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: যাত্রীবেশে সৌদিয়া পরিবহনের নৈশ কোচে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের সন্দেহের তীর ওই কোচের চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারের দিকে বলে জানা গেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে বাস সংশ্লিষ্ট এই তিন জনের নাম উল্লেখ করেছেন বাদী বিল্লাল হোসেন জনি।
পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন এই তিনজনকে ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল শনিবার চকরিয়া উপজেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে সোপর্দকৃতরা হলেন লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া গ্রামের মো. আমির হামজার ছেলে বাসচালক মো. কামাল (৬০), একই গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে হেলপার সাহাদুল ইসলাম (১৯) ও কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা চাঁন্দেরপাড়ার মো. হোসেনের ছেলে সুপারভাইজার শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন (৩৮)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. নুরেখোদা সিদ্দিকী বলেন, ঘটনার প্রকৃত তথ্য উদঘাটনের জন্য আদালতে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আগামী ধার্যতারিখে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, চালক, সহকারী ও সুপারভাইজারের সহায়তায় বাকলিয়া এলাকা থেকে সাতজন অজ্ঞাতনামা ডাকাত একই বাসে (চট্টমেট্রো-ব-১১-১১২৫) উঠে। পথিমধ্যে ডাকাত দলের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু করে। তখন বাস যাত্রীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলে মারধর শুরু হয় এবং দুই যাত্রীকে এলোপাতাড়ি গুলিও করে সশস্ত্র ডাকাতেরা। এ ঘটনায় বাসের অন্তত ১৫ যাত্রী আহত হন। ডাকাতদল বাসটির ৩৩ জন যাত্রীর কাছ থেকে অন্তত ২০টি মোবাইল, নগদ কয়েক লাখ টাকা ও চার নারী যাত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণালঙ্কার কেড়ে নেয়। এ পরিস্থিতিতে বাসের চালক, সুপারভাইজার ও হেলপার ডাকাতদলের পক্ষাবলম্বন করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, বাদীর বর্ণনা অনুযায়ী বাকলিয়া থেকে যাত্রীবেশে যে সাতজন ডাকাত একই বাসে উঠে, তারাও একই কাউন্টার থেকে এক টিকেটে সাতটি সিট বরাদ্দ নেয়। সেই সিট বরাদ্দ কী ডাকাতদলের কেউ নিয়েছেন, নাকি বাস সংশ্লিষ্ট কেউ ডাকাতদের জন্য আগে থেকেই বরাদ্দ রেখেছেন। সেটি বের করা গেলেই ডাকাতির পুরো ঘটনা জানা যাবে।
এদিকে চলন্ত বাসে ডাকাতের ছোড়া গুলিতে আহত দুজন এখনো কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের পানছড়ি গ্রামের এজাহার আহমদের পুত্র আবদুল্লাহ আল মামুনের (২৭) অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। গুলিবিদ্ধ অপর যাত্রী রাকিব উদ্দিনও ভর্তি রয়েছেন একই হাসপাতালে।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশরাফ হোসাইন চকরিয়া নিউজকে বলেন, চাঞ্চল্যকর এই ডাকাতির ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত: