সোয়েব সাঈদ :: মেজর (অবঃ) সিনহা মো. রাশেদ খান এর সহকর্মী শিপ্রা রানী দেবনাথ এর ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস, টাকাসহ জব্দকৃত ২৯ প্রকার মালামাল র্যাবের কাছে হস্তান্তর করেছে রামু থানা পুলিশ।
মেজর সিনহা হত্যাকান্ডের পরদিন রামু উপজেলার নীলিমা রিসোর্ট থেকে এসব উপকরণ উদ্ধার করা হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিমান চন্দ্র কর্মকারের নেতৃত্বে র্যাবের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২ টায় রামু থানা থেকে এসব মালামাল গ্রহণ করেন। এসময় রামু থানার ওসি আবুল খায়ের উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে সকল মালামাল র্যাবের তদন্তকারি কর্মকর্তাকে হস্তান্তর করতে রামু থানা পুলিশকে আদেশ দিয়েছেন আদালত। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আদালত নম্বর-১) রামু’র এর বিজ্ঞ বিচারক মোহাং হেলাল উদ্দিন বৃহস্পতিবার ২০ আগস্ট এ আদেশ দেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিমান চন্দ্র কর্মকার জানিয়েছেন- ল্যাপটপ, মোবাইল, হার্ডডিস্ক, ২ লাখ টাকাসহ ২৯ প্রকার মালামাল আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে র্যাবের কাছে হস্তান্তর হয়েছে। এসব ডিভাইস ব্যবহৃত হয়েছে কিনা তা পরে তদন্ত সাপেক্ষে জানানো হবে। এনিয়ে কোন তথ্য গোপন রাখা হবে না।
গত ৩১ আগস্ট মেজর (অবঃ) সিনহা মেঃ রাশেদ খানকে হত্যা করার পর রামুর খুনিয়াপালং হিমছড়ি এলাকায় মেরিন ড্রাইভ রোডের নীলিমা রিসোর্ট থেকে স্টামফোর্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী শিপ্রা রানী দেবনাথ কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে রামু থানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দিয়ে চালান দেয়। যার নম্বর : জিআর-৩১১/২০২০ (রামু)। শিপ্রা রানী দেবনাথকে গ্রেপ্তারের সময় তার কক্ষ থেকে উদ্ধার করা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সমুহ এ মামলার জব্দ তালিকায় আনা হয়নি। পরে রামু থানা কর্তৃপক্ষ পৃথক আর একটি জব্দ তালিকা তৈরি করে এবং জিডি মূলে বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলা রুজু করে শিপ্রার ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ও অন্যান্য মালামাল রামু থানার এই মামলার আইও এসআই শফিকুল ইসলাম এর হেফাজতে রাখে।
রামু থানার জিআর-৩১১/২০২০ নম্বর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিমান চন্দ্র কর্মকারকে দেওয়া হলে তিনি রামু থানা কর্তৃক শিপ্রার জব্দকৃত সকল মালামাল তাঁর হেফাজতে আনার জন্য ও বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলাটির তদন্তভার নিতে আদালতে আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার আদালতে শুনানীকালে রামু থানার বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলার আইও শফিকুল ইসলাম র্যাবের এই আবেদন এর বিরোধিতা করে মালামাল তার হেফাজতে রাখতে ও বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলাটি তার মাধ্যমে তদন্ত অব্যাহত রাখার অনুমতি দিতে আবেদন জানান। শুনানীর সময় আদালত রামু থানার আইও শফিকুল ইসলাম এর কাছে একটি মামলায় কেন ২ টি জব্দ তালিকা তৈরি করে বিবিধ মামলাটি কেন সৃজন করা হলো- এমন প্রশ্ন করলে ইনস্পেক্টর শফিকুল ইসলাম এর কোন সদুত্তর আদালতে দিতে পারননি। পরে আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে শিপ্রা রানী দেবনাথকে গ্রেপ্তারের সময় তার কক্ষ থেকে উদ্ধার করা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সহ সকল মালামাল হস্তান্তর করতে ও বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলার তদন্তভার জিআর-৩১১/২০২০ (রামু) নম্বর মামলার বর্তমান আইও র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিমান চন্দ্র কর্মকারকে দেওয়ার জন্য আদেশ দেন। একই সাথে বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলা ও শিপ্রার মালামাল সমুহ তার কাছে রাখার জন্য রামু থানার ইনস্পেক্টর শফিকুল ইসলামের করা আবেদনটি আদালত খারিজ করে দেন।
পাঠকের মতামত: