শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এ লক্ষ্যে একটি নীতিমালা চূড়ান্ত হয়েছে। নীতিমালাটি বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক অতিরিক্ত সচিব এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষা প্রশাসনে শিক্ষকদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা ও তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নীতিমালাটি অনুমোদন পেলে শিক্ষক ব্যাতীত অন্য কেউ নতুন করে মাঠপর্যায়ের শিক্ষা প্রশাসনে যুক্ত হবেন না।
প্রস্তাবিত নীতিমালা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকরা তিন বছরের জন্য প্রশাসনে নিয়োগ পাবেন। তিন বছর পূর্ণ হলে তারা আবার স্কুলে শিক্ষকতায় ফিরে যাবেন। তবে তাদের মধ্য থেকেই অভিজ্ঞতা ও পদোন্নতির অবস্থা বিবেচনায় পর্যায়ক্রমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা থেকে উচ্চপর্যায় পদোন্নতি দেয়া হবে।
বর্তমানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তা পদে যথাক্রমে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক পদায়নের ব্যবস্থা কার্যকর আছে। এসব শিক্ষকের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপপরিচালক নিয়োগ পদ্ধতি চালু আছে।
প্রস্তাবিত এ নীতিমালায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাউশি কর্মচারীদের মধ্য থেকে ৩০ শতাংশ পদ সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব থাকলেও তা বাদ দেয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে মাউশি থেকে পাঠানো খসড়া নীতিমালায় উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে ২০ শতাংশ সরাসরি, ৫০ শতাংশ প্রেষণ বা সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে এবং ৩০ শতাংশ মাউশি কর্মচারীদের মধ্য থেকে পূরণের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরাসরি এবং পদোন্নতির দিকটি বাদ দিয়ে জনপ্রশাসনে প্রস্তাব পাঠায়। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ‘আদর্শ নিয়োগবিধি হয়নি’ মন্তব্য করে নীতিমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠায়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগের নীতিমালাটিই আবার অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে। নীতিমালায় তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের পদোন্নতি দিয়ে সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে পদায়নের প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ লক্ষ্যে গত ২৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি নির্দেশনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে। তবে এই নির্দেশনাও শিক্ষা মন্ত্রণালয় আমলে নেয়নি বলে জানা গেছে।
এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, একটি নিয়োগবিধিতে সরাসরি নিয়োগ অবশ্যই থাকবে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় তা না করে নিয়োগের নামে মূলত ‘বদলি-নীতিমালা’ করেছিল। তাই সেটি ঠিক করতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তবে বর্তমানে যারা কর্মরত আছেন তারা পদোন্নতিসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। বর্তমানে ৪৪৭টি উপজেলার মধ্যে ১১৭টি উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আছেন। অপরদিকে ৬০টি সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ শূন্য আছে। এসব কর্মকর্তা মাঠপর্যায়ে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে বই বিতরণ ও উপ-বৃত্তির টাকা বিতরণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। সরকার প্রতি উপজেলায় একটি করে সরকারি হাইস্কুল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। আগের ৩৩৫টি হাইস্কুলের সঙ্গে ইতিমধ্যে আরও ১২৩টি বেসরকারি হাইস্কুলকে সরকারি ঘোষণা করা হয়েছে। -দৈনিক শিক্ষা :
পাঠকের মতামত: