নাস্তিকদের কথায় বাংলাদেশকে স্যাকুলার রাষ্ট্র বানাতে চাচ্ছে সরকার
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় উগ্র স্যাকুলার ও ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা আওয়ামী লীগের ঘাড়ের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আছে। তাদের কথায় বাংলাদেশকে স্যাকুলার রাষ্ট্র হিসাবে পরিণত করতে চাচ্ছে সরকার। দেশের তৌহিদী জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলেও সরকারের ভ্রান্ত অপচেষ্টা রুঁখে দেবে।
সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিলের অংশ হিসেবে কক্সবাজারে বিক্ষোভে বক্তারা এসব কথা বলেন।
২৫ মার্চ শুক্রবার বাদে আসর শহরের খুরুশকুল রাস্তার মাথা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌরসভার সামনে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নাস্তিক্যবাদীরা রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করে আলেমসমাজ ও ইসলামের বিরুদ্ধে এবং দেশের তৌহিদি জনতার ধর্মীয় অনুভূতিতে একের পর এক আঘাত করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় হঠাৎ করে সেই ইসলামবিদ্বেষী দুষ্টচক্র সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের অপতৎপরতায় মেতে উঠেছে। বৃহত্তর তৌহিদি জনতার ধর্মীয় অনুভূতিতে এই গুটিকয়েক ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকদের চূড়ান্ত আঘাত হানার স্পর্ধা দেখে আমরা প্রচন্ড ক্ষুব্ধ ও স্তম্ভিত।
হেফাজতে ইসলাম কক্সবাজার জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা হাফেজ ছালামত উল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, সংবিধান থেকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রধর্মের বিলুপ্তিকরণ দেশের আলেমসমাজ ও তৌহিদি জনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করে সংবিধানকে ইসলামবিদ্বেষী সেকুলার নাস্তিক্যবাদীদের আদর্শে পরিণত করার ষড়যন্ত্র এদেশের বৃহত্তর তৌহিদি জনগণ ও আলেমসমাজ রাজপথে কঠোর আন্দোলনে নেমে নস্যাৎ করে দেবে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আগুন নিয়ে খেলবেন না। অনেক হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ তৌহিদি জনতার মনের ভাষা বুঝে রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের অপতৎপরতা অতিসত্বর বন্ধ করুন। অন্যথায় দেশের তৌহিদি জনতা ও আলেমসমাজ রক্ত দিয়ে তা প্রতিহত করবে ইনশাআল্লাহ। আমাদেরকে রাজপথে নামতে বাধ্য করনে না।
বিক্ষুব্ধ হেফাজত নেতারা বলেন, ভারতের তুলনায় এদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো অনেক নিরাপদ ও স্বস্তিতে রয়েছে। এখানে সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনো ধরনের বর্ণবাদ, জাতপাতের সংস্কৃতি কিংবা আর্থসামাজিক বৈষম্যের মতো অমানবিক ও নিবর্তনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি নেই, কেননা ইসলাম এখানে মহানুভবতা ও সাম্যের মহান শিক্ষা দিয়ে একটি স্থিতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে বিরাজমান। সুতরাং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকলে এতে করে সংখ্যালঘুদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে এক্ষেত্রে কিছু মিডিয়ার একচক্ষু দালালি নীতি ও প্রপাগান্ডামূলক তৎপরতা পরিহার করতে হবে।
ভারত ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের মদদদাতা হিসেবে ইতোমধ্যেই কুখ্যাতি লাভ করেছে। তাই বলা যায়, সংবিধানে সেকুলারিজম থাকলেও যে সবার ধর্মীয় সমানাধিকার নিশ্চিত হয়না তা বলাই বাহুল্য। এছাড়া আমাদের সমাজে বহুভাষাভাষীর অধিবাস সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠের ‘বাংলা’ই হচ্ছে রাষ্ট্রভাষা, তেমনি সংবিধানে সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্ম ‘ইসলাম’ দেশের রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে বহাল রাখার পাশাপাশি সবার ধর্ম পালনের অধিকার ও স্বাাধীনতা সংরক্ষণ করা হয়েছে।
বক্তারা দুঃখের সাথে বলেন, এদেশে আজ স্বয়ং সংখ্যাগরিষ্ঠ তৌহিদি জনতা ও আলেমসমাজই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও নিপীড়নের নির্মম শিকার। ইসলামে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের প্রতি রাষ্ট্রের চরম রাজনৈতিক বৈষম্যমূলক নীতির কারণে প্রশাসন ও আর্থ-সামাজিক স্তরে পক্ষপাতমূলকভাবে সংখ্যালঘু হিন্দু নাগরিকদের উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা অবাধ করে দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ইসলাম ভাবাপন্ন নাগরিকরা বঞ্চনা ও বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির শিকার।
হেফাজত নেতা মাওলানা নুরুল হক চকোরীর পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন ইসলামী রাজনীতিবিদ মাওলানা আ.হ.ম নুরুল কবির হিলালী, জেলা হেফাজতের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াছিন হাবীব, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আব্দুস সালাম কুদসী, হেফাজতের কক্সবাজার শহর শাখার মাওলানা হাফেজ মুবিনুল হক, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা এহতেশামুল হক, মাওলানা মুফতি এমদাদুল্লাহ হাসান, মাওলানা হুমায়ুন কবির, মাওলানা ক্বারী আজিজুল হক, ক্বারী রুহুল কাদের, ইসলামী ছাত্র সামজের জেলা সভাপতি হাফেজ আবুল মঞ্জুর, হেফাজত নেতা মাওলানা আব্দুল্লাহ, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সাঈফী, মাওলানা মোহাম্মদ নুর প্রমুখ। এ দিকে একই দাবীতে কক্সবাজার শহর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও মফস্বল এলাকায় বিক্ষোভ করেছে তৌহিদী জনতা। এসব বিক্ষোভ থেকে সরকারকে ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড থেকে সরে আসার আহবান জানানো হয়।
পাঠকের মতামত: